সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কেন গণফেলের কবলে ?

পিবিএ,ঢাকা: সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা করে শত্রুতা ও হিংসাবশত কম নাম্বার দেয়া হয়েছে এবং গণহারে পরীক্ষার খাতায় ফেল করিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে বার্তা সংস্থা পিবিএ’র কাছে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী অনেক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবস্থাপনার ফলেই ঘটছে এমন ঘটনা। ভুল স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা সমাধানে তৎপর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এক বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একাধিক বিষয়ে ফেল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অনেক শিক্ষার্থী। রয়েছে পরীক্ষা দেয়ার পরও অনুপস্থিত দেখানো, সঠিকভাবে নম্বর না দেয়ায় গণফেলের মতো ঘটনা ঘটারও অভিযোগ।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবস্থাপনার ফলেই ঘটছে এমন ঘটনা। ভুল স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা সমাধানে তৎপর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, আছে হাজিরার প্রমাণও, কিন্তু ফলাফলে এসেছে পরীক্ষার হলে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। আক্ষেপ নিয়ে নিজের এমন ফলাফলের বর্ণনা দিচ্ছিলেন ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নিসাদ প্রধান।

শিক্ষার্থী নিসাদ প্রধান বলেন, আমি পরীক্ষা দিয়েছি, তারা সেটা ভালো ভাবে মূল্যয়নই করেনি। আমার রেজাল্ট সিট, হাজিরা খাতা দেখে যে মূল্যয়ন করা, সেভাবে তারা মূল্যায়নই করে নাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ২০১৭ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষায় এমন ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল এসেছে অসংখ্য শিক্ষার্থীর। রয়েছে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে একাধিক বিষয়ে ফল পাওয়ার মতো ঘটনাও। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের খামখেয়ালিপনার কারণে বার বার এমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

এক শিক্ষার্থী বলেন, বৈষম্য এত বেশি হয় কি করে।

গণফেল ও ত্রুটিপূর্ণ ফলাফলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তরিকতার ঘাটতিকে দুষছেন এই শিক্ষাবিদ। প্রশাসনে পরিবর্তন আনার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, একটি শিক্ষার্থী একটি পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছে, সে তিন বিষয় কি করে অকৃতকার্য হয়। আরো অনেক আমরা দেখেছি ত্রুটি ফলাফল। অতএব এই দায় মাথায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পদত্যাগ করা দরকার।

সমস্যার কথা স্বীকার করে, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, যে কোনো ভুল সংশোধনীয়। আমরা এই ধরণের শিক্ষার্থীদের তরফ থেকে অনুরোধ করবো, দ্রুত আমাদের অবহিত করা। রের্কড চেক করে নিশ্চিত হয়ে ভুল সংশোধন করা হবে। এবং কোন ভুল তথ্যর দিয়ে কাউকে কোনো সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না।

অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে শিক্ষার্থীরা বলছেন,সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা যাতে কেবল যথাযথভাবে সাত কলেজের শিক্ষকরাই মূল্যায়ন করেন আর ঢাবি যাতে কেবল মার্কশীট প্রণয়ন করে। তারা যাতে মার্ক না দেয়।কারণ ঢাবির শিক্ষকরা আমাদের পড়ান না, পড়ান আমাদের শিক্ষকরা। তাছাড়া কোন শিক্ষার্থী তার পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাপারে সন্তোষ্ট না হলে সহজে ও দ্রুত যাতে খাতা চ্যালেঞ্জ করতে পারে তার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করার দাবী জানান শিক্ষার্থীরা । সাত কলেজের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অতি দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে পরিস্থিতির আলোকে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ মন্তব্য করছেন শিক্ষা বিশ্লেষকরা।

২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৭টি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর থেকে নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

 

পিবিএ/জেআই

আরও পড়ুন...