বিলুপ্তির পথে রাজশাহীর বিখ্যাত খয়ের শিল্প

পিবিএ,চারঘাট রাজশাহী: পাকিস্তান আমল থেকে রাজশাহীর খয়ের শিল্প একসময় বাংলাদেশের মধ্যে তথা বিদেশেও এর সুনাম এবং রপ্তানি ছিল অধিক পরিমানে। বেশির ভাগ পরিবার এই ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। খযের ব্যবসা দিনে দিনে বিলুপ্তির পথে। খয়ের শিল্পকে স্থায়ী করণে কোন ধরনের উদ্যেগ নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার খয়ের বাংলাদেশের মধ্যে বিখ্যাত ছিল। প্রায় ২শত অধিক পরিবার খযের ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। তাদের জীবিকা নির্ভরের একমাত্র প্রতিষ্ঠান ছিল খয়ের শিল্প। এখন শুধূ ৫ থেকে দশটি পরিবার তাদের খয়ের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে মাত্র।

বাবলা গছের কশ থেকে খয়ের তৈরী হয়। এই খয়ের থেকে রং তৈরীসহ পানের সাথে মিশিয়ে খাওয়া প্রচল রয়েছে। খয়ের ব্যবসায় শ্রমীকরা তাদের ভাগ্যের চাকা বদলাতে পাছে না। বর্তমান নানা কারণে এই শিল্প বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণের বাবলা গাছের অভাব, বাজার উন্নয়নে কোন প্রদক্ষেপ নেই। অর্থনৈতিক ব্যাংক সুবিধাসহ স্থায়ী করনে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেই বলে দাবি করেছেন খয়ের ব্যবসায়ী সোন মিয়া, খায়রুস নেছা এবং কামাল ।

স্থানীয় বেশির ভাগ নারীরা এই খয়ের উৎপাদনার সাথে জড়িত। নারী শ্রমীকরা প্রতিদিন খুব সকাল থেকে শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১শত টাকার বিনিময়ে পরিশ্র করে আসছে। পাকিস্তান তথা পূর্ব পরুষের আমল থেকে খয়ের তৈরী কাজে তার ব্যাস্ত সময় কাটিয়েছে। এই কাজ ব্যতিত অন্য কোন কাজ তারা জানে না। বিধায় দিন আনি দিন খায় জীবন নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিবে বলে জানান খয়ের শিল্প শ্রমিকরা।

এই খয়ের শিল্পকে বাচাতে স্থানীয় সাংসদ, চেয়ারম্যন, কৃষি অধিদপ্তর কর্তৃক কোন ধরনের সহযোগিতা তারা পাচ্ছে না। তদুপরি স্থানীয় এমপি সংসদে খয়ের শিল্পকে টিকসয় ব্যবসায় রুপান্তরিত করতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিন্ত একজন সাংসদের কর্তব্য তার স্থানীয় সকল কৃষি শিল্প গুলোর সরকারী কর্তৃক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিতে হবে বলে জানান চারঘাট পৌর খয়ের শিল্প সম্পাদক ইবরাহীম শেখ।

রাজশাহী কৃষি অধিদপ্তর সূত্র মতে, খয়ের শিল্প উন্নয়নে কোন ধরনের সরকারী বরাদ্দ নেই। তবে বনবিভাগ কর্তৃক খয়ের তৈরীর কাজে ব্যবহারিত বাবলা গাছের ব্যবস্থা রয়েছে। একসময় গ্রাম গঞ্জের মেঠো পথে সারি সারি বাবলা গাছের বিচরণ ছিল। বর্তমান বাবলা গাছ খয়ের তৈরীর জন্য র্স্বনের মত। তদুপরি কৃষকরা অধিক লাভবান ফসলের দিকে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে।

মৌসুমী ফল আম, কলা, লেবু, পেয়ারা, বরাই এবং বর্তমান ড্রাগন ফলের চাষাবাদ বেশ প্রচল হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনজুর রহমান, রাজশাহী সিনিয়র হটিকালচার কেবিডি আদুর রহামন, এবং জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা মুনঞ্জর হক।

পিবিএ/ও/হক

আরও পড়ুন...