যেভাবে রমজান মাসে পরিপূর্ন ঘুম হবে

পিবিএ ডেস্ক: রমজান মাস এলেই সেহরী আর রোজার কারণে ঘুমের ঘাটতি দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে পরদিন কর্মক্ষেত্রে। কাজ তো বটেই, এতে করে বাজে প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরের উপরেও। এই রোজায় স্বাস্থ্য ও কাজের গতি স্বাভাবিক রাখতে নিজের ঘুমের চাহিদা মিটিয়ে নিন ছোট্ট কিছু কৌশলে।

ঘুমের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখুন-

চেষ্টা করুন প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার মধ্য থেকে নিজের সঠিক ঘুমের সময়টুকু বের করে নিতে। এমন না যে, একবারেই আপনাকে পুরোটা ঘুমিয়ে নিতে হবে। তবে এমনভাবে শিডিউল করুন যেন, মোট মিলিয়ে ঘুমের সময় না কমে। যদি রাতে দুই ঘণ্টা কম ঘুমান, তাহলে সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে সেটা পুষিয়ে নিন।

নির্বিঘ্ন ঘুম নিশ্চিত করুন-

যে সময়টুকুই ঘুমাচ্ছেন, যেটা যেন নির্বিঘ্ন হয় সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। চারপাশের পরিবেশ শান্ত রাখুন, ঘর অন্ধকার করে ফেলুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। মোটকথা, আপনার অল্প সময়ের ঘুমটুকুও যেন ভালো হয় সেটার দিকে খেয়াল রাখুন। তাহলে অল্প ঘুমালেও সেটা আপনার সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দেবে।

রমজানের ঘুমের সময়সূচী তৈরি করুন-

রমজানের জন্য আলাদা একটি ঘুমের সময়সূচী তৈরি করে নিন। একটু দ্রুত ঘুমোতে যান। সকালে বরাবরের মতো সময়েই উঠে পড়ুন। ইচ্ছে করলে অফিস থেকে ফিরে ইফতারের আগে ঘুমিয়ে নিন। আর যদি এই সময়সূচী আপনার জন্য ঠিকঠাক না হয়, তাহলে নিজের পছন্দমতো ঘুমের সময়সূচী তৈরি করুন। তাহলে ঘুমের কমতি হবে না, আর আপনার স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে।

কর্মক্ষেত্রে পাওয়ার ন্যাপ নিন-

অফিসে যদি প্রচণ্ড ঘুম আসে এবং ক্লান্ত লাগে, তাহলে দুপুরে বা নির্দিষ্ট সময়ে ১০-১৫ মিনিটের জন্য চোখ বন্ধ করুন এবং পাওয়ার ন্যাপ নিয়ে নিন। সাধারণত, দিনের এই সময়ে নেওয়া এই ঘুমটুকু অনেক ভালো কাজ করে এবং পরবর্তীতে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

খাবার বাছুন-

অনেকে ইফতারের সময় খুব ভারী খাবার খেতে পছন্দ করেন। অনেকে আবার চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ করেন। চিনিযুক্ত, মশলাদার, ভারী খাবারগুলো পরবর্তীতে আমাদের ঘুম না হওয়ার ক্ষেত্রে কারণ হিসেবে কাজ করে। চেষ্টা করুন প্রচুর পানি পান করতে এবং হালকা খাবার খেতে। কফি বা চা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার ঘুমের সমস্যা কিছুটা হলেও দূর হবে। দ্রুত ঘুম চলে আসবে এবং ভালো ঘুম হবে। শারীরিক ক্লান্তি অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।

সূর্যের আলোতে সময় কাটান-

রমজানের প্রথম দিকে আমদের শরীর পাল্টে যাওয়া সময়ের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না। তাই, এই সময় শরীরের ঘড়িকে ঠিক রাখতে দিনের বেলায় পর্যাপ্ত সময় সূর্যের আলোতে থাকুন। এতে করে আপনার শরীর দিন ও রাতের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যাবে, বায়োলজিকাল ক্লক ঠিকভাবে চলবে এবং পরবর্তীতে ঘুমটাও ভালো আসবে।

প্রযুক্তির থেকে দূরে থাকুন-

রমজানের সময় প্রযুক্তি পণ্য, এই যেমন- মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, বাড়তি আলো ইত্যাদি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ঘুমানোর সময় তো অবশ্যই এসব ব্যাপার থেকে দূরে থাকবেন। এতে করে ঘুম ভালো হবে। অনেকেই বারবার ঘড়ির দিকে তাকান ঘুম না আসলে। এই অভ্যাসটি পরিত্যাগ করুন।

ছুটির দিনেও একইরকম ঘুমান-

অনেকে ছুটির দিনে অনেকটা সময় ঘুমানোর চেষ্টা করেন। তবে রমজানে ছুটির দিনেও আর সবগুলো দিনের মতোই ঘুমান। অন্যথায়, এটি পরবর্তীতে আপনার ঘুমের উপরে বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। অন্যান্য দিন পর্যাপ্ত ঘুমাতে তখন সমস্যা দেখা দিবে।

কৌশলটা যেমনই হোক না কেন, চেষ্টা করুন রোজা রেখে সঠিক পরিমাণ ঘুম নিজেকে দিতে। এতে করে আপনি যেমন বেশি কাজ করতে পারবেন, তেমনি সুস্থতাও ধরে রাখতে পারবেন আগের চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে।

সূত্র- দি ন্যাশনাল, আল মদিনা ইন্সটিটিউট।

আরও পড়ুন...