পিবিএ,কক্সবাজার: ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজ দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কক্সবাজারের পেকুয়ায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। সম্প্রতি শপথ নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করে গুছিয়ে উঠার আগেই কারাগারে ঢুকতে হল ১৪ বছরের জন্য। বৃহস্পতিবার (৯মে) এক অস্ত্র মামলায় তাকে ১৪ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ খোন্দকার হাসান মোঃ ফিরোজ এর আদালত। রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর। তাই সাথে সাথেই তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
২০০৭ সালের ১৩ আগষ্ট নিজ বাড়ি থেকে দশ রাউন্ড কার্তুজ, তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৭ লাখ টাকাসহ তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করেছিল র্যাব। এসময় তার আরো চারভাইকেও আটক করা হয়েছিল। র্যাব-৭ এর তৎকালীন কক্সবাজারের কোম্পানি কমান্ডার মেজর রুহুল আমিন অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় ১৫ দিন জেলে কেটে কারামুক্ত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ২১ মাস ধরে মামলার বিচারকার্য চলে। এসময় আসামীরা বিচারকার্যে উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ শুনানী এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৯ মে (বৃহস্পতিবার) মামলার রায় ঘোষণার ধার্য্য দিন দুপুর ১২টার দিকে জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য আসামীদের উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ খোন্দকার হাসান মোঃ ফিরোজ। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় মামলার প্রধান আসামী সদ্য নির্বাচিত পেকুয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। বেকসুর খালাস পান অন্যান্য আসামীরা।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মমতাজ আহমদ জানান, সাক্ষ্য প্রমাণে মামলার প্রধান আসামী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয়। তাই আইন মতে আদালত তাকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শুরু থেকেই এই ঘটনাকে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে আসছিলেন জাহাঙ্গীরসহ অন্যরা। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাথে আঁতাত করে র্যাব পরিকল্পিতভাবে ওই উদ্ধারের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। রায় ঘোষণাকালেও বিচারকের সামনে জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্যরা এই দাবি করেছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, এই মামলা নিয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকতেন জাহাঙ্গীর আলম। মামলাটি সমঝোতা করার জন্য নানা চেষ্টা-তদবিরও করেছিলেন। কিন্তু কোনোভাবেই তাতে সফল হননি তিনি। মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করার পর থেকে আরো বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তার আশঙ্কা ছিলো বড় অঘটন ঘটতে পারে। রায় ঘোষণাকালে তিনি উপস্থিত হতে চান নি। তবে আইনজীবির পীড়াপিড়িতে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত হয়েছিলেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের লোকজন।
পিবিএ/টিএ/আরআই