এসএম জুয়েল: একটা সময় ছিল যখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ও কোন শিক্ষার্থী কোন গুরুতর সমস্যায় আক্রান্ত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার জন্য মানববন্ধন করতো, আন্দোলন করতো। ৫২, ৫৪, ৬২, ৬৯,৭১ এ তাদের আন্দোলন, সংগ্রাম অস্বীকার করার কোন উপায় নাই। কিন্তু বর্তমান সময়ে তাদের অবস্থান নিয়ে আমরা আশাহত না হয়ে পারলাম না।
এক রকম জোরপূর্বক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের টপে থাকা রাজধানীর সাতটি বড় সরকারি কলেজ ছিনিয়ে নিয়েছে বলা যায়। এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবিতে অধিভুক্ত হওয়ার জন্য আন্দোলন করে নি। কলেজগুলোর সেশনজট দূরীকরণ ও শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধিভুক্ত করা হয়েছে বটে, কিন্তু তার ন্যূনতম প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারে নি ঢাবি।
পক্ষান্তরে, সাত কলেজে সেশনজট আরো বেড়েছে, পরীক্ষার রুটিন নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে, কঠিন পরীক্ষাগুলোর আগে ১/২ দিন বন্ধ রেখেছে, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে কিনা সেগুলো পর্যবেক্ষণ না করে প্রশ্নপত্র কঠিন করা হচ্ছে, খাতা দেখছেন ঢাবির শিক্ষকেরা, সব বিষয়ে ৭০% মার্ক পেলেও ১/২ টি বিষয়ে গনহারে ফেল করিয়ে দিচ্ছে, ফলাফলসরূপ ডিপার্টমেন্ট ভেদে ১০/১২% শিক্ষার্থী পাশ করছে, খাতা পুন:নিরক্ষন আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না তারা, পরীক্ষা শেষ করে নয় মাস কিংবা এক বছরের মধ্যে ফলাফল না পেয়ে আন্দোলন করতে হচ্ছে তাদের, এমনকি ফলাফলের এক বছরের মধ্যেও তারা সাময়িক সনদ পাচ্ছে না।
দেশের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সাথে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ হয় কিনা জানা নেই। এই মুহূর্তে তাদের আন্দোলন করা ছাড়া বিকল্প কোন উপায় দেখছি না।
তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু অবাক করার বিষয় এই শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে তাদের নিয়ে বিভিন্ন পেজে, গ্রপে ট্রল করে মজা নিচ্ছে ঢাবির শিক্ষার্থীরা। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। ঢাবির শিক্ষার্থীদের উচিত, এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো তাদের স্যারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড দাবিদার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এতটুকু সাহায্য কি আশাকরা যায় না!
সর্বপরি, আমরা বিশ্বাস করি দেশের সার্বিক উন্নয়ন এই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্রদের ব্যতিরেকে সম্ভব নয়।
পিবিএ/জেআই