দু’কর্মচারীর লাগামহীন দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ মৎস উন্নয়ন কর্পোরশন

আল-মামুন,পিবিএ,রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরশনের রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ,মংলা,ঢাকার কারওয়ান বাজার,প্রধান কার্যালয়সহ এমন কোন কেন্দ্র নেই যেখানে তাদের দুর্নীতির কালো থাবা পড়েনি। অল্প সময়ে লাগামহীন দুর্নীতিতে রাতারাতি গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। পদ ছোট হলেও অনিয়মের মাধ্যমে আয় করা তাদের কোটি কোটি টাকার কাছে এখন সবাই যেন অসহায়।

আলা উদ্দিন পদে এম এল এস এস (অফিস সহকারী) ও মুকিত বিন নুর উচ্চত্বর অফিস সহকারী (পূর্বে ছিলেন ডেলিভারী এন্ড কালেকশন সহকারী) হলেও ক্ষমতার দাপটে দাপিয়ে বেড়ানো এই দুই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের অনিয়ম-দূর্নীতি আর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশনের বাকীরা।

একের পর এক বদলিও ঠেকাতে পারেনি চক্রটির দূর্নীতি। অনিয়মের অর্থে বিলাসী জীবন আর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করে আবারো দূর্নীতির খতিয়ানের পৃষ্টায় যোগকরাটা এখন তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। ফলে সংশ্লিষ্ট চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ছে অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। তাদের সাথে হাত করে রাঙ্গামাটিতে স্থানীয় বদলি বাণিজ্য, অনিয়ম-দূর্নীতি কাঁচা ও শুকনো মাছ পাঁচারে সহায়তার ফলে সরকার ও কর্পোরেশন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি সাধন হওয়াসহ সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। আর তাদের দুজনের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাল্লা দিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়।

সিন্ডিকেট চক্রে কর্পোরেশনের বেশ কয়েক জন কর্তা ব্যক্তিরাও জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। “আলা উদ্দিন” দিনের পর দিন কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রধান কার্যালয় ও মন্ত্রনালয়ের ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের রুই, কাতল,চিতলসহ মাছের কার্টন মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময় পছন্দমত স্থানে বদলি হয়ে আসেন। মুতিকও একই সাথে পাল্লা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তার অনিয়নের দুরন্ত ঘোড়া।

২০১৬ সালে তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। তারপরও তাদের কেউ রুকতে পারেনী। এছাড়াও আলা উদ্দিনকে ২৪ শে এপ্রিল ২০১৮ সালে আবারো অনিয়ম-দূর্নীতির দায়ে চট্টগ্রাম মৎস বন্দরে বদলি করা হয়। বর্তমানে সে চট্টগ্রামে কর্মরত আছে। এদিকে তারই অপর দূর্নীতিবাজ চক্রের সঙ্গি মুকিত বিন নুর উচ্চত্বর অফিস সহকারী রাঙ্গামাটিতে থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন তার কর্মকান্ড।

ধারাবাহিক অনিয়মের ফলে রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রাম মংলাসহ বেশ কয়েক জায়গায় বদলি হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং বেড়েছে তাদের দূর্নীতি। আলা উদ্দিনের রয়েছে ঢাকায় ফ্ল্যাট,শ^শুর বাড়িতে তার স্ত্রীর নামে রাবেয়া মঞ্জিল,নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড়।

তাদের অনিয়ম ও ক্ষমতার দাপটের কাছে অসহায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদিক ব্যক্তি জানান, তাদের দূর্নীতির লাগাম টেনে ধরা না গেলে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়াসহ সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। বাড়বে অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতা আর কালো টাকার প্রভাব। তাই তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান অভিযোগকারীরা।

এ সকল বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের জিম্মি করে বর্তমানে আলা উদ্দিন চট্টগ্রাম মৎস বন্দরে কর্মরত রয়েছে বলে জানা গেছে। সচেতন মহলের দাবী অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়মের বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে থলের বিড়াল। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সকল অভিযুক্ত বেপোরোয়া দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা করা না গেলে সংকটে পরবে মৎস কর্পোরেশন। রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।

এদিকে দূর্নীতির বিষয়ে অস্বীকার করে আলা উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের করা অভিযোগ সত্য নয়। তিনি সামান্য একজন কর্মচারী উল্লেখ করে কোন ধরনের অনিয়মের সাথে জড়িত নেই বলে তিনি জানান।

অপরদিকে-মুকিত বিন নুরও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করে জানান, বেশ কয়েক মাস পূর্বে ডেলিভারী এন্ড কালেকশন সহকারী পদ থেকে উচ্চত্বর অফিস সহকারী পদে পদোন্নতি লাভ করেন জানিয়ে তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে তিনি জানান।

এদিকে ভুক্তভোগীরা দূর্নীতিবাজ দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত করতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ দুদকের হস্থক্ষেপ কামনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...