নোয়াখালীর উত্তরাঞ্চলে খাল পূন:খনন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

পিবিএ,নোয়াখালী: নোয়াখালীর উত্তরাঞ্চলে খাল পূন:খনন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ন, অব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাসারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ঠিকাদাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন। এ নিয়ে এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতে জেলার উত্তরাঞ্চলের বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, চাটখিল ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও বন্যা দেখা দেয়। এলাকার অধিকাংশ ছোট বড় খালের উপর একশ্রেনীর ভূমিদস্যুরা দোকানপাট, আবাসিক ভবরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় খালগুলো নালায় পরিণত হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই ওই সব এলাকায় কৃত্রিম বন্যা ও জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

খাল পূন:খনন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম
খাল পূন:খনন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েন স্থানীয়রা। তাছাড়া বন্যা ও জলবদ্ধতার কারণে অনেক জমিতে কৃষি পন্য উৎপাদন করা যায়না। কৃত্রিম বন্যা ও জলাবদ্ধাতা থেকে রক্ষা পেতে এবং অধিক কৃষি পন্য উৎপাদনের সুবিধার্থে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে খালগুলো পুন:খননের দাবী জানিয়ে আসছিলো। এর পেক্ষিতে চার উপজেলার অর্ধ লক্ষ মানুষের দূর্ভোগ নিরসনে ও জীবন-মান বৃদ্ধি কল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ছোট বড় ৮টি খাল পূন:খননের উদ্যেগ নেয়। বিগত মার্চ মাস থেকে খাল পুন:খননের কাজ শুরু হয়।

পুন:খনন কাজে প্রতি ৩ কিলো মিটারের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয় ২০ লাখ টাকা। কিন্তু কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ন, অব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাসারিতার অভিযোগ উঠে। বেগমগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর, দূর্গাপুর, মিরওয়ারিশপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে খাল পুন: খননের নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।

তাছাড়া কাজের সময় নকশা দেখিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন তা প্রদর্শন না করেই যেনতেন ভাবে কাজ করছেন। ফলে স্থানীয়দের ফসলি জমি, বসত ভিটাসহ গুরুত্বপূর্ন অনেক স্থাপনা, গাছপালা নষ্ঠ হচ্ছে। ক্ষতিপূরনও পাচ্ছেনা কেউ। এতে নিরুপায় হয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। অভিযোগ পত্রে এলাকাবাসী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও ক্ষতিপূরণের দাবী করেন।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন পিবিএকে জানান, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখাবো। অনিয়মে জড়িত থাকলে ঠিকাদারকে কাজের বিল দেওয়া হবেনা। এলাকাবাসীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে সাথে কথা বলে অভিযুক্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। অনিয়ন করে কেউ পার পাবেনা।

এ ব্যাপারে নোয়াখালী-৩(বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ পিবিএকে বলেন, জননেত্রী প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশিত এই খাল পুন: খনন প্রকল্পের কাজ চলছে। খাল খননে অনিয়মের সাথে জড়িতদের আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিন্দা জানাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবেও বলেন জানান তিনি।

তবে অভিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বাহাদুর চেয়ারম্যান জানান, আমরা ম্যাপ অনুযায়ী কাজ করছি। কাজ করতে গেলে কিছু এলোমেলো হবেই। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা দেওয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। জেলার উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিন প্রাণের দাবী খাল পুন:খনন প্রকল্পে অনিয়মের সাথে জড়িতদের ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

পিবিএ/ইএনই/আরআই

আরও পড়ুন...