পিবিএ,জামালপুর: জামালপুরের এক সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বাসার কাজের গৃহকর্মীকে একের পর এক ধর্ষণ এবং গর্ভাবস্থায় অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ফাঁস হওয়ায় বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। লম্পট শিক্ষা অফিসার মাজেদুল ইসলামকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ধর্ষনের শিকার কিশোরী বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেছে।
ধর্ষনের শিকার কিশোরী জানায়, প্রায় ১ বছর আগে সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব মাস্টারের ছেলে মাজেদুল ইসলামের বাসায় ঝি-এর কাজ নেয়। মাজেদুল ইসলাম মেলান্দহ উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। তার স্ত্রী নাজমা আক্তারও একজন স্কুল শিক্ষিকা। কিছুদিন কাজ করার পর থেকেই গৃহকর্তা মাজেদুল ইসলাম স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতি শনিবার তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানী করে।
এক পর্যায়ে তাকে হাত ও মুখ বেঁধে জোরপুর্বক ধর্ষন করে এবং এ ঘটনা ফাঁস না করার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর থেকেই প্রতি শনিবার স্ত্রী স্কুলে চলে যাবার পর নিয়মিত তাকে ধর্ষন করে আসছিল। এ অবস্থায় কিশোরীর শাররিক গঠন পরিবর্তন দেখা দিলে চতুর শিক্ষা অফিসার মাজেদুল ইসলাম দুই মাস আগে তাকে পার্শ্ববর্তী পিঙ্গল হাটি গ্রামে রোকন নামে এক যুবকের কাছে বিয়ে দেয়।
এদিকে বিয়ের দুইমাস পার হলেও গৃহবধু আকলিমার ঋতুস্রাব না আসায় তার শাশুরী ঔষধ খাওয়ানোর পর ৭ মাসের একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করে। বিয়ের দুই মাসের মাথায় ৭ মাসের বাচ্চা প্রসব করায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। লোকলজ্জার ভয়ে স্বামী রোকনের পরিবার সদ্য ভুমিষ্ট মৃত সন্তানসহ আকলিমাকে বাবার বাড়িতে রেখে যায়। এ ঘটনা জানাজানির পর আকলিমা প্রতিবেশীদের কাছে গৃহকর্তা মাজেদুলের পাশবিক যৌন নির্যাতনের কাহিনী খুলে বললে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
এক পর্যায়ে এলাকাবাসী মাজেদুলের বাড়ী ঘেরাও করে বিচারের দাবী করে। ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর থেকেই মাজেদুল পলাতক রয়েছে। জামালপুর সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সালেমুজ্জামান জানিয়েছেন, গৃহকর্মী আকলিমার উপর পাশবিক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় মাজেদুল ইসলামকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আকলিমার গর্ভের মৃত সন্তানের ময়নাতদন্ত ও শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও গৃহকর্তা মাজেদুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে জামালপুর জেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি পিবিএকে বলেন, এই ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য ওই সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিবিএ/এমআর/আরআই