জেনে নিন গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে ১০ টি উপায়

পিবিএ ডেস্কঃ গরম কাল তো এসেই গেল। আর এখন মে মাস, মানে পচা গরম, ভ্যাপসা ভাব আর খুব রোদ। তা বলে তো বাড়িতে আমরা বসে থাকবো না। বাইরে আমাদের যেতেই হবে। আর তখনই ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে সব পানি বেরিয়ে গিয়ে আমরা ডি-হাইড্রেটেড আর ক্লান্ত হয়ে যাব। কিন্তু এই অবস্থা থেকে আমরা উদ্ধার পেতে পারি তখনই যখন আমাদের শরীর ঠাণ্ডা থাকবে। আর শরীর ঠাণ্ডা কিন্তু ওই রাস্তায় যখন-তখন কোল্ড ড্রিঙ্কস খেলে হবে না। ভিতর থেকে ঠাণ্ডা থাকতে হলে খেতে হবে কিছু খাবার, নিয়মিত। আসুন দেখে নিই সেই খাবারগুলো কী কী।

তরমুজঃ গরমে এই একটা ফল কিন্তু আমাদের বাঁচিয়ে দিতে পারে। গরম কালের জন্য একদম আদর্শ ফল। এতে ৯১.৪৫% জল রয়েছে। তাই এই ফল খেলে আপনার যেমন ফল খাওয়ার গুণ পাওয়াও হবে, তেমনই জলীয় ভাব থাকবে শরীরে। পানির চাহিদা মিটবে। আর শরীর ঠাণ্ডা থাকবে। পাশাপাশি এর মধ্যে যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, তাও কিন্তু শরীর ঠাণ্ডা করতে খুব সাহায্য করে। তরমুজ যে কোনও সময়েই মুখে নিলে আমরা এই ঠাণ্ডা ভাবটা বুঝতে পারি।

শসাঃ শসার মধ্যে যে পুষ্টি গুণ রয়েছে তা নিয়ে নতুন করে আর কথা নাই বা বললাম। কিন্তু শরীর ঠাণ্ডা রাখতে এই সবজির কিন্তু জবাব নেই। শসার ক্ষেত্রেও অধিকাংশ অংশ জুড়ে থাকে পানি। আর শসা খেলে তাই এই জল আমাদের শরীরে পানির চাহিদা মেটায়। শরীর ঠাণ্ডাও রাখে।

ডাবের পানিঃ এটিও গরমে খাবার জন্য খুব ভালো একটি জিনিস। সামার-ড্রিঙ্ক হিসেবে খুবই ভালো। ডাবের পানিতে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল আর অন্যান্য খনিজ উপাদান। তাই শরীর থেকে ঘাম বেরিয়ে গেলেও এটি তার জায়গা পূরণ করে দেয়। আর এই ডাবের পানির মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা রাখার উপায়ও রয়েছে। নিয়ম করে রোজ ডাবের পানি খেলে আপনি খুব ভালো থাকবেন এই গরমে।

পুদিনা পাতাঃ এই গরমে নিশ্চয়ই রাস্তায় বেরিয়ে দেখেছেন যে পুদিনার শরবৎ বিক্রি হচ্ছে। গরমে এই পুদিনা জাস্ট ম্যাজিকের মতো কাজ করে। গরম থেকে বাড়িতে এসে পুদিনা খেলে দেখবেন শরীর সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা হয়ে গেছে, তাপমাত্রা অনেকটা নেমে গেছে। তাই পুদিনা পাতা খান। রায়তা বা দইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে পুদিনা খেতে পারেন। আবার পুদিনার চাটনিও খেতে পারেন। তবে যে ভাবেই খান না কেন, পুদিনা খাওয়া কিন্তু খুবই দরকার।

সবুজ শাক-সবজিঃ গরম হোক কি শীত, সবুজ শাক-সবজি যে কোনও সময়েই বেশি করে খাওয়া উচিৎ। সবুজ শাক-সবজিতে অনেক পানি থাকে। এই জল আপনার শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখে আর পি.এইচ ব্যাল্যান্স বজায় রাখে। তবে মনে রাখবেন, খুব বেশি রান্না করলে কিন্তু সবজির এই জল শুকিয়ে যায় আর অন্যান্য পুষ্টি গুণও হারিয়ে যায়। তাই কম রান্না করে সবজি খান।

পেঁয়াজঃ শুনে অবাক হবেন না যে পেঁয়াজ আপনার শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পারে। পেঁয়াজে যে পানি আছে সেটা তো আপনারা বুঝতেই পারেন ঝাঁজ দেখে। এই পেঁয়াজ খুব ভালো হয় যদি আপনি ভাতের সঙ্গে কাঁচা খেতে পারেন। যদি সেটা খেতে খারাপ লাগে, তাহলে স্যালাডের সঙ্গে খান বা রায়তার সঙ্গে খান। শুনলে অবাক হবেন, পেঁয়াজ কিন্তু সান স্ট্রোক থেকে আপনাকে রক্ষা করে।

ধনেপাতাঃ ধনেপাতা এখন শুধু শীতকালে নয়, গরম কালেও পাওয়া যায়। ধনেপাতার ৯৫% হল পানি আর ঠিক সেই কারণেই এই পাতা আপনার শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পারে। এর পাশাপাশি এতে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এই খনিজ থাকায় গরমে শরীর থেকে ঘাম বেরিয়ে গেলেও শরীরের তেমন ক্ষতি হয় না। ধনেপাতার চাটনি বানিয়ে খেতে পারেন।

লাউঃ অনেকেই হয়তো এটি খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু লাউয়ের মধ্যেও আছে প্রচুর পানি, সেটা লাউ কোরালেই দেখা যায়। পানির পরিমাণ বেশি বলে এটি শরীর ঠাণ্ডা রাখে। সঙ্গে এতে আছে সোডিয়াম আর পটাশিয়াম। তাই হজমেরও খুব সুবিধে হয় এতে। আর যেহেতু এটি সহজেই পাওয়া যায় তাই এটি কিন্তু প্রথম দিকে থাকে তালিকার।

আনারসঃ এরকম সুস্বাদু আর কাজের ফল খুব কমই আছে। গরমের দিনে পাওয়া যায় এই ফল বেশি। তাই এই ফল খুব বেশি করে খান। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। আর এই ফলেও জলের পরিমাণ বেশ বেশি। তাই নিশ্চিন্তে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে আনারস খান।

পেঁপেঃ গরমে শরীর ভাল আর ঠাণ্ডা রাখতে পেঁপেও কিন্তু খুব উপকারী। এটি খনিজ আর ভিটামিন সমৃদ্ধ। আপনি কাঁচা পেঁপে তরকারিতে দিয়ে বা সিদ্ধ করে খেতে পারেন। অথবা আপনি পাকা পেঁপে ফল হিসেবেও খেতে পারেন। তবে যেভাবেই খান না কেন, পেঁপে খেলে আপনি এই গরমে ভালো থাকবেন এটি নিশ্চিত।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...