শিশুর পেটে মায়ের আরেক শিশু!

পিবিএ,ঠাকুরগাঁও: ১১ বছরের একটি শিশুর পেট থেকে আরেক শিশু পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ে। আর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

thakurgao-PBA

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও শহরের হাসান এক্সরে ক্লিনিকে অপারেশনের পর শিশুর পেটে আরেকটি শিশু পাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা।

শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত দশদিন আগে হঠাৎ করেই শিশু বিথিকার শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ফুলতে থাকে তার পেট। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবারের লোকজন। বিথিকাকে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে। তবে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে না গিয়ে তাকে নিয়ে যায় রংপুরের এক ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানায় শিশু বিথিকার পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে।

যা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা প্রয়োজন। এদিকে শিশু বিথিকার বাবা পেশায় দিনমজুর, রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় তার শিশু কন্যাকে নিয়ে ফিরে আসে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ঠাকুরগাঁও হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে ভর্তি করে ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েলের শরণাপন্ন হন।

ডা. জুয়েল ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হওয়ায় প্রথমে রাজী হননি। পরে আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন।

পরে শুক্রবার বিকেলে ডা. জুয়েল অপারেশন করে দেখেন তার পেটে প্রায় চার কেজি ওজনের একটি টিউমার রয়েছে। টিউমার অপসারণ শেষে টিউমারটি কেটে তার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। টিউমারের ভেতরে রয়েছে আরেক শিশু। সেখানে শরীরের হাত পা, কলিজাসহ শরীরের নানা অংশ বিদ্যমান।

এ ব্যাপারে ডা. মো.নুরুজ্জামান জুয়েল জানান, মেডিকেল সায়েন্সে এটাকে বলে ‘ফেটুস ইন ফেটো’ অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভিতরে বাচ্চা। জন্মগতভাবে বিরল রোগের শিশুটি জমজ কিন্তু কোনো কারণ বশত আরেক শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। তাই এটা বিথিকার জন্মের সময় তার শরীরের অভ্যন্তরে রয়ে যায় এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর তা বিথিকার শরীরে বাড়তে থাকে। তবে ভেতরে থাকা জিনিসটি ধীরে ধীরে বেড়েছে। বর্তমানে শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো। আশা করা যায় আর কোনো ঝুঁকি নেই।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহাজাহান নেওয়াজ জানান, বিষয়টি আমাদের অজানা। যেহেতু ক্লিনিকে অপারেশন হয়েছে। আমরা সে বিষয়ে অবগত নই। তবে এ ধরনের ঘটনা বিরল।

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...