পিবিএ,নোয়াখালী:“জোবায়ের একদিন বড় হবে, পড়া লেখা করে মানুষের মতো মানুষ হবে, দেশের সেবা করবে, কত স্বপ্ন ছিলো তাকে নিয়ে, আজ সব শেষ হয়ে গেলো, ও আল্লাহ একি হলো, আমরা কলিজার টুকরাটার” বুধবার দুপুরে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে এভাবেই ছোট্ট শিশুর মতো বিলাপ করে কাঁদছিলো আর কথাগুলো বলছিলো বন্ধুদের ছুরিকাঘাতে নিহত কলেজ ছাত্র জোবায়ের হোসেনের পিতা মোশারফ হোসেন।
জোবায়েরের পিতার আত্মচিৎকারে হাসপতালের বাতাস ভারী হয়ে উঠে। তাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা হারিয়েছে সবাই। পরিবারের সদস্যরাও তাকে সান্তনা দিতে পারছেনা। মঙ্গলবার রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভা দিঘীর পূর্বপাড়ে তারাবির নামাজ থেকে ডেকে নিয়ে জোবায়ের হোসেনকে (১৮) কুপিয়ে হত্যা করে সহপার্টিরা। নিহত যোবায়ের সেনবাগ উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের কাজিরখীল গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে ও নোয়াখালী সরকারি কলেজের একাদশ প্রথম বর্ষের ছাত্র। তারা দীর্ঘ আট বছর চৌমুহনীর পৌরসভার দিঘীর পাড়ের আলীপুরে ভাড়া বাসায় থাকেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সহপাঠিদের সাথে পৌরসভা দিঘীর পূর্বপাড়ে আড্ডা দেয় জোবায়ের। এ সময় মোবাইলে গেম খেলা নিয়ে সহপাঠিদের সাথে তা কথা কাটাকাটি হয় তার। এর জের ধরে রাত ৯ টার দিকে তারাবির নামাজ থেকে ডেকে নিয়ে পাশ^বর্তি রাস্তায় উপর জোবায়েরকে উপর্যপুরী ছুুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সহপাটিরা।
স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা মৃত ঘোষনা করে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সময় আহত কিশোর আফসারসহ সন্দেহজনক ৮ জনকে আটক করেছে।
হাসপতালে নিহত জোবায়েরের পিতা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ছেলের শখ পুরন করতে সম্প্রতি তাকে একটি দাবী মোবাইল ফোন কিনে দেই। সেই ফোনে গেম খেলা নিয়েই সহপার্টিদের সাথে তার ঝড়গা হয়। এ নিয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে। মোবাইল আমার সন্তানের জীবন কেড়ে নিবে জানলে কখনো তাকে দামী মোবাইল কিনে দিতামনা। তিনি হত্যাকাদের দ্রুত বিচারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে বুধবার বিকালে বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ফিরোজ মোল্লা পিবিএকে জানান, এ ঘটনায় ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িতদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে। মূলত মোবাইলে গেম খেলা নিয়ে ও বড় ভাই ছোট ভাই দ্বন্ধে এই হত্যাকান্ড ঘটে। হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ওসি ফিরোজ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকে চৌমুহনী পৌরসভার দিঘীর পূর্ব পাড়ে স্থানীয় ও বহিরাগতরা বিভিন্ন সময় নানা রকম অপরাধমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। কেহ প্রতিবাদ করলে তার উপর হামলা হতো। ইতিমধ্যে উক্ত এলাকায় কয়েকটি ঘটনাও ঘটেছে বলে এলাকাবাসী জানান।
পিবিএ/ইএনই/আরআই