শুস্ক মৌসুমে পিপাসায় কাতর বড়াল নদী

পিবিএ,বাগাতিপাড়া (নাটোর): কালপরিক্রমায় ও অপরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে বড়ালের টইটুম্বর যৌবনে ভাটা পড়েছে। স্লুইসগেট নির্মাণের পর বন্যার স্রোতহীন সীমিত পলিমিশ্রিত পানি বড়ালে প্রবেশ করায় ক্রমান্বয়ে নদীর তলদেশ পলিমাটিতে ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। শুস্ক মৌসুমে পানিশূন্য বড়াল পিপাসায় আর্তনাদ করে। সরকারি উদ্যোগে বড়ালের তলদেশ খনন করা দরকার।

সরেজমিন জানা যায়, বড়াল পদ্মার শাখা নদী। রাজশাহীর চারঘাটের পদ্মা বড়ালের উৎপত্তিস্থল। বড়াল পদ্মা থেকে বেরিয়ে আঁকা-বাকা পথে বাঘা, বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম উপজেলার মধ্যদিয়ে পাবনা পেরিয়ে সিরাজগঞ্জে যমুনায় মিলিত হয়েছে। বর্তমান বড়ালের করুন দশা।

শুস্ক মৌসুমে পিপাসায় কাতর বড়াল নদী
বড়াল নদী

মনে হচ্ছে বড়াল খালে পরিনত হয়েছে। পানিশূন্য কংকালসার বক্ষ পিপাসায় কাতর। তলদেশ গোচারণভুমি। কোন কোন জায়গায় ক্রীকেট খেলার মাঠ। বড়াল চর সবুজ ফসলে ভরা। বর্ষা মৌসুমেও বড়ালে প্রয়োজনীয় পানি প্রবেশ করে না। বড়ালে শুস্ক মৌসুমে সামান্য পানি থাকলেও তা অব্যবহার যোগ্য। গোসল করলে শরীর চুলকায়।

ক’যুগ আগে বড়ালের যৌবন ছিল টইটুম্বরপূর্ণ। বর্ষা মৌসুমে বন্যায় বড়াল কানায় কানায় পূর্ণ হতো। প্রখর স্রোত ছিল। কোন কোন সময় দূ’কূল বন্যায় প্লাবিত হয়ে পলিমিশ্রিত পানি বিভিন্ন মাঠে প্রবেশ করতো। কৃষকরা পলিমিশ্রিত উর্বর জমিতে দ্বিগুণ ফসল ফলাতো। সারা বছর জেলেরা নদীর ছোট বড় মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে স্বাচ্ছন্দে সংসার চালাতো। পণ্য বোঝায় বড় বড় পালতোলা নৌকা বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতো।

নৌকা বাইচ প্রতিযোতা হতো। কিশোর-কিশোরীরা আনন্দে সাঁতার কাটতো। একাধিক সূত্র মতে কালপরিক্রমায় পদ্মা নদীতে সঠিকভাবে বন্যার পানি না আসায় ও চারঘাটে বড়াল নদীর উপর স্লুইসগেট নির্মাণের পর বড়ালের যৌবনে ভাটা পড়েছে। স্লুইসগেট নির্মাণের পর বন্যার সীমিত স্রোতহীন পলিমিশ্রিত পানি বড়ালে প্রবেশ করায় ক্রমান্বয়ে নদীর তলদেশ পলিমাটিতে ভরাট হয়ে গেছে।

জামনগর এলাকার কৃষক আব্দুল লতিফ শাহ্ জানান,তিন যুগ আগেও বড়াল নদীর বন্যার পলিমিশ্রিত পানি বিভিন্ন মাঠে প্রবেশ করে জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পেতো। কৃষি জমিতে দ্বিগুন ফসল ফলতো। জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস পিবিএকে জানান, বড়ালের নাব্যতা ফেরাতে বর্তমান সরকারের মেয়াদে বড়াল খননের ব্যবস্থা হবে বলে তিনি আশা করেন।

পিবিএ/এফআর/আরআই

আরও পড়ুন...