লোহাগড়া হাসপাতালের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রোগীদের স্থানান্তর

পিবিএ,নড়াইল: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবনের ছাদের প্লাষ্টার আবারও খসে পড়ার পর রোগীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে।স্বাভাবিক রোগীদের ভর্তি না করে বাড়ীতে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এ খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গত বুধবার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা সরেজমিন পরিদর্শন করে হাসপাতালের পুরাতন দ্বিতর ভবনের পুরুষ ওয়ার্ড ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষনা করেছেন এবং ভর্তি রোগীদের জরুরীভাবে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন ।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী শামসুল আলম, সহকারী প্রকৌশলী তানজিলা ফেরদৌসী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুক্তি বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি দল বুধবার সরেজমিনে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্লাষ্টার খসে পড়া ভবনের পুরুষ ওয়ার্ড ও মহিলা ওয়ার্ডসহ ভবনটি পরিদর্শন করেন।

হাসপাতালের ভবন ঝুঁকিপূর্র্ণ হওয়ায় রোগীদের স্থানান্তর
হাসপাতালের ভবন ঝুঁকিপূর্র্ণ হওয়ায় রোগীদের স্থানান্তর

পরিদর্শনকারী দল ভবনের পুরুষ ওয়ার্ডের সব গুলো বিমে ছোট-বড় ফাটল দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেন। এ ধরনের ফাটলের কারনে ভবিষ্যতে ভবন ধ্বসের আশংকা রয়েছে বলেও তারা জানান। এ ছাড়া ছাদের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারাসহ কংক্রিট খুলে পড়ায় পুরুষ ওয়ার্ড ঝুঁকিপূর্ন চিহ্নিত করে ভর্তি রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশসহ ওই ওয়ার্ড ব্যাবহার না করার জন্য লিখিতভাবে সুপারিশ করেন। তা ছাড়া পাশের মহিলা ওয়ার্ডের একটি বিমেও ফাটল দেখা দেওয়ায় সতর্কতার সাথে ব্যবহারের পরামর্শ দেন।

এদিকে ঝুঁকিপূর্ন ভবন চিহ্নিত করার একদিন পর গত বৃহস্পতিবার বিকালে আবারও ওই ভবনের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ছাদের প্লাষ্টার খসে পড়লে রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ওই ভবনে থাকা অনেক রোগী ছুটাছুটি করে । কেউ কেউ স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। বাকীরা বারান্দাসহ সিড়ি ঘরে আশ্রয় নেয়।

রোগীরা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ঝুকির মধ্যে আছি। এ ঘটনার পর বুধবার দুপুরে জরুরী ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার লুৎফুন নাহার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল-মামুন ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সকল ওয়ার্ডের রোগীদের পাশের নতুন ভবনে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে ডাক্তার লুৎফুন নাহার বলেন,জনবল ও স্থান সংকটের কারনে সব রোগীদের ভর্তি না করে শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ্য রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে এবং কম অসুস্থ্য রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

এ অবস্থায় রোগী, নার্স, ডাক্তার , কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তাই পাশের নতুন ভবনে রোগীদের সাময়িকভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে ঝুকিপূর্ন ভবনের সব রোগীকে সরিয়ে ফ্লোর বেডে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিদাঃ) এমএম আরাফাত হোসেন হাসপাতলে গিয়ে সার্বিক খোজখবর নেন ।

উল্লেখ্য,লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দুই বছর আগে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয় এবং এ প্রকল্পের আওতায় একটি তিন তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মান করা হয়। নবনির্মিত ভবনটি হস্তান্তর করা হলেও ডাক্তার,নার্সসহ জনবল সংকট,ফ্যান ও বাথরুমের সমস্যার কারনে পুরাতন ভবনে রোগী থাকার ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হতো ।

পিবিএ/এসআই/আরআই

আরও পড়ুন...