শ্বশুর বাড়ীর অত্যাচারে ঘর ছাড়া সাহিদা

পিবিএ,ঢাকা: স্বামী ফেলে গেছে দুই বছর আগে। শ্বশুর বাড়ীতে জুটতো প্রতিনিয়ত নির্যাতন। এক পর্যায়ে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা সাহিদাকে মারধর করে তার ৮ বছরের শিশু কন্যাসহ মে মাসের ৯ তারিখে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এর আগেও কয়েকবার অত্যাচার করে বাড়ি থেকে বের করে দিলেও গ্রামবাসীরা শালিসের মাধ্যমে মিটমাটের চেষ্টা করে। কিন্তু সাহিদার শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা শালিস মানেনা। ফলে অত্যাচার অব্যাহত থাকে। সর্বশেষ ৯ তারিখে বের করে দিলে প্রথমে পাশের প্রতিবেশী এবং এখন সাহিদা তার ছোট শিশুকে নিয়ে টঙ্গীতে উকিল বাবা মোঃ ফারুক হোসেনের বাড়ীতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

উল্লেখ্য, সাহিদার স্বামী লিটন মিয়া (৩৫) দুই বছর আগে সাহিদা ফেলে সৌদি আরবে চাকরি নিয়ে চলে যায়। তার আগে তাদের মধ্যে বনিবনা ছিল না। লিটন নিজে তার স্ত্রীর উপর অত্যাচার করতো। বিদেশ যাওয়ার ৪/৫ বছর আগেই সে স্ত্রী সন্তানকে ফেলে ঢাকায় অবস্থান করতো। তাছাড়া তাদের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে, কিন্তু ছেলেটাকে দুই বছর আগে মাদ্রাসায় ভর্তি করার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আসে। কিন্তু কোথায় ভর্তি করেছে তা সাহিদা জানে না। সাহিদার অভিযোগ, লিটন ঢাকায় আরেকটি বিয়ে করেছে। তবে, এখন লিটন সৌদিতে অবস্থান করলেও স্ত্রী-সন্তানের কোন খোঁজ নেয় না।

সাহিদার উকিল বাবা ফারুক হোসেন পিবিএ’কে জানান, ২০০৬ সালে ঢাকার ধানমন্ডি সোবহানবাগে লিটনের সাথে সাহিদার বিয়ে হয়। উল্লেখ্য, তখন লিটন সোবহানবাগের এক বাড়ীতে গাড়ী চালক হিসেব চাকরি করতো এবং একই বাড়ীতে সাহিদাও গৃহকর্মীর চাকরি করতো। বিয়ের ব্যাপারে বাড়ির মালিক সহায়তা করেন।

বিয়ের সময় লিটন সাহিদা এবং সে যে বাড়িতে কাজ করতো সে বাড়ীর পক্ষ থেকে লিটনকে তিন লক্ষ টাকা ও সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণ যৌতুক হিসেবে প্রদান করে। বিয়ের পর তাদের দুটি সন্তান হয়। কিন্তু বিয়ের ৬/৭ বছর পর থেকেই লিটন সাহিদার উপর অত্যাচার শুরু করে।

এক পর্যায়ে সে সাহিদাকে গ্রামের বাড়িতে (চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার উজান ছিনাইয়া গ্রামে) রেখে আসে। কিন্তু লিটনের বাবা, ভাই সহ পরিবারের লোকেরা সাহিদাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি, তারা তার উপর অত্যাচার করে। এমনকি বালিশচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে বলেও ফারুক হোসেন জানান।

শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এবং নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে বর্তমানে টঙ্গীতে উকিল বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিলেও নিজের ও সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে সে চিন্তিত। সাহিদা এ ব্যাপারে অনতিবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...