রাজশাহীতে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানিযোগ্য

 

পিবিএ,রাজশাহী: বাংলাদেশেল চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে রাজশাহীর আম। এ বছর বিদেশে রপ্তানিযোগ্য আমের উৎপাদন প্রায় ১০০ মেট্রিক টন। রাজশাহী কৃষি বিভাগ বিদেশে রপ্তানি করতে চায় ৫০ মেট্রিক টন আম।

বিভিন্ন তথ্য মতে রপ্তানি করতে জেলায় এখন প্রায় ৫০ হাজার আম উন্নত প্রযুক্তিতে ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ভাল জাতের কিছু আম বিদেশে রপ্তানি করার উপযোগী করে তুলা হচ্ছে। গত বছর নানা জটিলতায় ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ পদ্ধতিতে চাষ করা আমের রপ্তানি কমে গেলেও এবছর চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা আশাবাদী বলে জানান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নুর-উর-রহমান, জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের ও পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ।

জলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, বিদেশে আম রপ্তানি করতে হলে ২৬টি শর্ত মানতে হবে। ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ হচ্ছে ২৬টি শর্তেও মধ্যে একটি। তবে আমের মান ভাল হলে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। বিদেশ আম রপ্তানি করতে হলে কোয়ারেন্টাইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এ জন্য রপ্তানিকারকরা আম ঢাকার শ্যামপুর প্লাট্রান কোয়ারেন্টাইন উইং সেন্ট্রাল প্যাকিং হাউসে নিয়ে যান। কর্তৃপক্ষ এর ছাড়পত্র দেয়ার মাধ্যমে জাহাজের কনটেইনারে করে আম বিদেশে রপ্তানি হবে।

সকল শর্ত সাপেক্ষে গত বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ২৫ মেট্রিক টন আম রপ্তানি করেছেন রাজশাহীর ১৪ জন ব্যবসায়ী। তবে ৩০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি করেছিলেন ২০১৭ সালে। গত বছর রপ্তানিযোগ্য আম ছিল প্রায় ১০০ মেট্রিক টন। বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানি করতে না পেরে কম দামে দেশের বাজারেই আম বিক্রি করতে হয়েছিল। এ বছর আম রপ্তানি করে লাভের মুখ দেখতে চান স্থানীয় চাষিরা।

রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার আম ব্যবসায়ী সাথে কথা বলে জানাযায়, বিদেশিদের শর্ত মতে গত বছর আমরা ১৪ জন ব্যবসায়ী একসঙ্গে আম রপ্তানি করি। তাদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। এবারও আমরা ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে ভালোভাবে আম চাষ করা হয়েছে। এবার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কর্তৃপক্ষের তদারকিতে আমি চাষিরা রাসায়নিক মুক্ত আম চাষ করেছে। এছাড়া নিয়ম নীতি মান্য করে গুণগত ভাল আমের চাহিদা রয়েছে।

গত ১৫ মে থেকে রাজশাহীতে গুটি জাতের আম নামতে শুরু করেছে। উন্নতজাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, রাণীপছন্দ ২৫ মে, খিরসাপাতা বা হিমসাগর ২৮ মে এবং লক্ষণভোগ বা লখনা নামানো যাবে ২৬ মে থেকে। এছাড়া ল্যাংড়া আম ৬ জুন, আমরুপালি এবং ফজলি ১৬ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১৭ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা জাতের আম। রাজশাহী অ্যাগ্রো ফুড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ারুল হক বলছেন, ২০১৬ সালে বেশি পরিমাণে আম রপ্তানি করা সম্ভব হয়েছিল। এর পরের দুই বছর কোয়ারেন্টাইনের কড়াকড়ির কারণে খুব বেশি পরিমাণ আম রপ্তানি করা যায়নি। এবার পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে তারা উদ্বীগ্ন। স্থানীয় বাজারের চেয়ে আমের দ্বিগুন দাম পাওয়া যায় বিদেশে আম রপ্তানি করে।

অবশ্য উন্নত প্রযুক্তিতে এই আম চাষে খরচও হয় বেশি। গত বছর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় তিন কোটি আম ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিতে চাষ করা হয়। কিন্তু আম পাঠাতে না পারার কারণে অনেক চাষিরা আগ্রহ হারিয়েছে। ফলে এ বছর ফ্রুট ব্যাগিং আমের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজারে। তবে ক্রেতাদের সাড়া পেলে আগামী বছর আবারও ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির ব্যবহার বাড়বে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, আম রপ্তানিতে আমাদের সক্ষমতা রয়েছে কমপক্ষে ১০০ মেট্রিক টন। অধিক পরিমান মানসম্মত উৎপাদিত আম বিদেশে রপ্তানি করতে কোন বাধা নেই।

পিবিএ/ওআই/হক

আরও পড়ুন...