কোরআন অধ্যয়ন ও প্রচারের গুরুত্ব

হেদায়াতের মালিক আল্লাহ এবং ইসলামী জ্ঞানের মূল উৎস আল কোরআন

মুহাম্মদ আবুল হুসাইন

মহাগ্রন্থ আল কোরআন হচ্ছে আল্লাহ’র দেয়া সবচেয়ে বড় নেয়ামত। এটি অত্যন্ত বরকতময় গ্রন্থ যা আমাদের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। তাই পবিত্র এই রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত, অধ্যয়ন এবং উপলব্ধি করা বড় প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন বলেন:

‘এ কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি, এটি বরকতপূর্ণ। এতএব তোমরা এর অনুসরণ কর এবং নিষিদ্ধ সীমা পরিহার করে চল। তবেই তোমরা রহমত প্রাপ্ত হবে।’-[আল আনআম : ১৫৫]

‘(হে নবী!) এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যেন বুদ্ধিমান লোকেরা একে গভীর ভাবে অধ্যয়ন ও চিন্তা-ভাবনা করে।’ -[আস সোয়াদ : ২৯]

আল্লাহ’র কালাম আল কোরআন দ্বীনের মূল উৎস।

যারা কোরআন পড়ে না, কোরআন থেকে হেদায়াত তালাশ করে না তারা দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ও বুঝ থেকে বঞ্চিত।

যারা আল্লাহ’র দেয়া হেদায়াত গ্রন্থ আল কোরআনকে বাদ দিয়ে ভিন্ন পথে দ্বীন তালাশ করে তারা মূলত আন্দাজ ও অনুমান নির্ভর মতবাদে বিশ্বাসী এবং মিথ্যা আকাক্সক্ষাই হল তাদের একমাত্র ভরসা। আল কোরআনের ভাষায় তারা নিরেট মূর্খ ছাড়া আর কিছুই নয়:

‘তোমাদের কিছু লোক নিরক্ষর। তারা মিথ্যা আকাক্সক্ষা ছাড়া আল্লাহ’র কিতাবের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছু নেই।’ -[আল বাকারা : ৭৮]

‘আমি তোমার প্রতি আমার জিকির (আল কোরআন) অবতীর্ণ করেছি, যাতে লোকদের সামনে ঐসব বিষয় বর্ণনা করতে পারো, যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। যেন তারা চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।’

আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এরও প্রথম ও প্রধান কাজ ছিল আল্লাহ’র কালাম আল কোরআনকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং কোরআনের শিক্ষার দিকে মানুষকে আহবান জানানো।

মূলত আল্লাহ’র দিকে আহবান করা বলতে কিন্তু আল্লাহ’র কালামের দিকে, আল্লাহ’র হুকুম-আহকাম ও তাঁর হেদায়াতের দিকে মানুষকে আহবান করাকেই বুঝায়।

তাই মহানবীর জীবনের অন্যতম প্রধান মিশন ছিল আল কোরআনের প্রচার করা, আল্লাহ’র কালামকে যথাযথভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন :

‘হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা যথাযথভাবে প্রচার কর। যদি তা না কর, তাহলে তো তুমি আল্লাহ’র রিসালাতকে পৌঁছালে না।’ -[আল মায়েদা : ৬৭]

‘হে চাদর আবৃত্ত শয্যাগ্রহণকারী, ওঠো, সাবধান কর, আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। -[মুদ্দাস্সির : ১-৩]

‘প্রচার করাই রাসূলের কর্তব্য। তোমরা যা প্রকাশ কর এবং গোপন কর সে সম্পর্কে আল্লাহ জানেন।’-[আল মায়েদা : ৯৯]

‘কত মহান তিনি যিনি তাঁর বান্দার উপর ফোরকান (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) নাযিল করেছেন, যাতে সে বিশ্ববাসীর জন্য সতর্ককারী হতে পারে।’-[ ফোরকান : ১]

এমনিভাবে পবিত্র কোরআন মজিদের আরো অসংখ্য আয়াত উদ্ধৃত করা যায়, যাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোরআন প্রচার করা, মানুষের কাছে আল্লাহ’র কালাম পৌঁছে দেয়া, তাদেরকে কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করে শোনানো, এর বিষয়বস্তু ও শিক্ষা তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়া, এর আলোকে মানুষকে কর্ম-কৌশল ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে তোলা, কোরআনের শিক্ষার আলোকে মানুষের মধ্যে বিরাজমান অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও গোমরাহি দূর করা এবং তাদেরকে সতর্ক ও সচেতন করে তোলা ছিল আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) নবুয়তি দায়িত্ব।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...