রূপপুর প্রকল্পে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান টিআইবির

পিবিএ ডেস্ক: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসিক ভবনের কেনাকাটায় অভূতপূর্ব অনিয়মের অভিযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (২২মে) সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে।

রূপপুর প্রকল্পে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান টিআইবির
টিআইবি

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই প্রকল্প নিয়ে নানামুখী বিতর্ক থাকার পরও তা সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অথচ শুরুতেই ক্ষুদ্র একটি অংশে যে ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাকে আমরা এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে মনে করি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সেখানে মাত্র ২৫ কোটি টাকা খরচের ক্ষেত্রেই যে ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে আমরা শঙ্কিত।

তিনি বলেন, প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী যদিও অনিয়মের মাত্রা সাগরচুরি মত, এ ধরনের সরকারী প্রকল্পে সরকারী কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে দুর্নীতির অভিযোগ বাংলাদেশে এই প্রথম নয়। তারপরও এই অনিয়মের দায় যে মন্ত্রণালয়ের সেই বিতর্কে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ জড়িয়েছেন। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কোন কোনো কর্মকর্তা আবার একে দুর্নীতি বলে মানতে নারাজ এমন তথ্যও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

আমরা আরো বেশি শঙ্কিত, কারণ দুর্নীতি দমন কমিশনও ‘ধীরে চলো’ নীতি ঘোষণা করেছে। প্রকল্পটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ কারণেই শুরুতেই সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে সতর্কবার্তা প্রদান করতে হবে যেন ‘বালিশ-কেটলির’ উপাখ্যান পুরো প্রকল্পে সম্ভাব্য অনিয়মের ‘হিমশৈলের চূড়া’ হিসেবে প্রতীয়মান না হয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরো বলেন, প্রকল্পের শুরুতেই যে সতর্ক বার্তা আমরা পাচ্ছি তাতে প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকারের আরো দৃঢ় অবস্থান নেয়া জরুরি। কারণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া তাই এর বাস্তবায়নের দায়িত্বও তাদের।

আর আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশসমূহের একটি এবং সেদেশের সরকার ও সরকারের যোগসাজশপুষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ধার ধারে না। তাই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের এখন থেকেই সচেষ্ট হতে হবে। যাতে দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক ব্যয়বহুল এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার’ নীতির যথাযথ প্রতিফলন ঘটে।

পিবিএ/আরআই

আরও পড়ুন...