ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট শুরু

 

পিবিএ ডেস্ক: ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৮টি দেশের জনগণ আজ থেকে ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে শুরু করেছে। আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত চলা নির্বাচন জুড়েই এবার ব্রেক্সিট ইস্যু প্রভাব বিস্তার করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে ইউরোপে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা ডানপন্থি পার্টিগুলো ধাক্কা খেতে পারে বলেও তারা মনে করেন।

ইইউর দেশগুলোর জনগণ এবারের ভোটের মাধ্যমে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে তাদের প্রতিনিধি বাছাই করবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য। তবে যুক্তরাজ্যের জনগণের জন্য আজকের ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এমন প্রতিনিধিকেই নির্বাচিত করার চেষ্টা করবে ব্রিটেনের জনগণ। এবার তারা ৭৩ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে ভোট দেবে। পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়ে আসা নতুন প্রতিনিধিরা ব্রেক্সিট প্রশ্নে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মধ্যস্থতায় যাবে, এমনটা চাইতেই পারে তারা।

ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে সচরাচর জনগণের ভোটের হার খুব একটা বেশি হয় না। কিন্তু পরিবর্তিত বাস্তবতায় এবারের অবস্থা ভিন্ন। কারণ গোটা ইউরোপ জুড়ে জাতীয়তাবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এবারের নির্বাচনে লড়ছে। ভোটের আগের বিভিন্ন জরিপে এবার ইউরোপের জনপ্রিয় দলগুলো বড় কিছু অর্জন করতে পারে, এমনটা বলা হচ্ছে।

ভোটাররা পার্লামেন্টের ৭৫১ জন প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করবেন। ইউরোপের প্রতিটি দেশই পার্লামেন্টে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রাখতে চাইবে। আর এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশই নিজস্ব প্রক্রিয়ায় এগোবে। নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে প্যান-ইউরোপিয়ান গ্রুপ তৈরি করা হবে। বর্তমানে এই গ্রুপের সদস্যসংখ্যা আট। এই গ্রুপের অধিকাংশ সদস্যই ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টির মধ্য ডানপন্থি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে আইন বাতিল অথবা অনুমোদন, বাজেট নিরূপণ এবং এই ব্লকের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটা ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ভূমিকা পালন করে। চলতি প্রেসিডেন্ট জ্যা ক্লদ জাঙ্কারের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছর শেষে। পার্লামেন্টে ইউরোপিয়ান কমিশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আর এই কমিশনের সদস্য নির্বাচিত করে সরকারগুলো এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিল।

আমস্টারডার্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কাটজিনা গাত্তারমানবিদেশি এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘কীভাবে ইইউ কাজ করে তা সহজে বোঝাপড়া করা যাবে না। ২৮টি দেশের রাজনীতি সব সময়ই ভিন্নভাবে পরিচালিত হয়।’ ফলে পার্লামেন্টে প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও দেশগুলো নিজস্ব স্বার্থকে এগিয়ে রেখে ভোট দেয়। ইতালির অভিবাসনবিরোধী লিগ পার্টির নেতা মাত্তেও সালভিনি গত মাসেই জনপ্রিয় এবং ডানপন্থি পার্টিগুলোকে নিয়ে নতুন ইউরোপিয়ান জোট গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ব্রিটেনের এক সহকারী অধ্যাপক দাফেন হাইকিওপোলোর মতে, এবারের নির্বাচনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে ভেতর থেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করবে দেশগুলো। অভিবাসনবিরোধী দলগুলো এবার জনগণের কাছে জাতীয়তাবাদের নতুন দিক তুলে ধরতে পারেন।

পিবিএ/হক

 

আরও পড়ুন...