মাওলানা এম. এ. করিম ইবনে মছব্বির,পিবিএ : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, নবীয়ে করিম (সা.) হজ থেকে এসে উম্মে সিনান আনসারিকে বললেন, তুমি কেনো হজ করনি? সে বললো অমুকের পিতা অর্থাৎ তার স্বামীর কারণে তার চাষাবাদের দুটি উট ছিল। একটি দিয়ে সে হজ করেছে অপরটি আমাদের জমি চাষ করেছে। নবীয়ে করিম (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই রমজান মাসের ওমরাহ হজ আমার সাথে বড় হজ করার সমান। (বোখারী শরীফ- ১৭৬৪, মুসলিম শরীফ- ১২৫৬)
অপর বর্ণনায় নবীয়ে করিম (সা.) বলেছেন, যখন রমজান আগমন করে তখন ওমরাহ হজ কর, কারণ রমজান শরীফের উমরাহ হজ বড় হজের সমান। (বোখারী- ১৬৯০, মুসলিম- ১২৫৬)
পবিত্র কোরআনুল করিমে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন, তোমরা আল্লাহের উদ্দেশে পবিত্র হজ এবং ওমরাহ সম্পূর্ণ কর। ( সুরা বাকারা- ১৯৬)
রমজান শরীফের রোজা আসলে হজের পূর্বাভাস। ওমরাহের সাথে তুলনা করলে ফরজ হজকে হজে আকবর অর্থাৎ বড় হজ এবং ওমরাহকে হজে আসগর অর্থাৎ ছোট হজ বলা যায়।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- নবীয়ে করিম (সা.) বলেছেন, দুইটি ওমরাহ হজ মধ্যবর্তী গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায় এবং হজে মাবরুরের পুরষ্কারই হচ্ছে বেহেশত। (বোখারী শরীফ)
হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসূলে করিমে (সা.) বলেন, এই ঘর অর্থাৎ কাবা গৃহ হচ্ছে ইসলামের নিদর্শন সমূহের একটি। যে ব্যক্তি এ গৃহে হজ পালন বা ওমরাহ করতে আসেন স্বয়ং আল্লাহপাক তার জিম্মা গ্রহণ করে ফেলেন। সে যদি ইন্তেকাল করে আল্লাহপাক তাকে জান্নাত দান করেন। আর সে যদি হজ করে সগৃহে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি পায়। তাহলে অঢেল পুরষ্কার ও আল্লাহের কৃপা নিয়ে ঘরে ফিরে। (তাবরানি)
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসূলে পাক (সা.) বলেন, আল্লাহপাক কাবাগৃহের হজ পালনকারীদের প্রতিদিন ১২০টি রহমত নাজিল করেন। এর মধ্যে ৬০টি তাওয়াফকারীর, ৪০টি নামাজ আদায়কারীর এবং ২০টি তাদের জন্য যারা কাবামুখী হয়ে বসে থাকেন। (তাবরানি)
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত- নবীয়ে করিম (সা.) বলেন, আমার এই মসজিদ অর্থাৎ মসজিদুন নববীতে নামাজ আদায় মাসজিদুল হারাম ব্যতীত অন্যান্য মসজিদে নামাজ আদায়ের চাইতে হাজার গুণ শ্রেষ্ঠ। আর মসজিদুল হারামে নামাজ আদায় লক্ষ্য গুণ শ্রেষ্ঠ। (আহমদ)
হযরত আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত- নবীয়ে করিম (সা.) বলেন, তুমি কি জান না হজ অথবা ওমরাহ হজ ইসলাম পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়। (মুসলিম শরীফ) ওমরাহ হজ পালনের মূল কাজ চারটি। এক- ইহরাম। ইহা ওমরাহ শুদ্ধ হওয়া পূর্বশর্ত। দুই- তাওয়াফ। ইহা ফরজ। তিন- সা’য়ী। ইহা ওয়াজিব। চার- হলক্ব বা ক্বসর। ইহা ওয়াজিব।
আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজান মাসে ওমরাহ হজ করার তৌফিক দান করুন।
পিবিএ/জেডআই