তারাও বাঁচতে চায়, তাদেরও একটি মন ও জীবন আছে

পিবিএ,কক্সবাজার: কক্সবাজারে দিন দিন ভবঘুরে মানসিক রোগীর (পাগল) সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘটছে নিত্য দিন নানান অঘটন।এসব মানসিক রোগীরা দুমুঠো আহারের সন্ধানে রাস্তা ঘাটে দোকান, রেস্টুরেন্ট ও লোকালয়ে ঘুরে বেড়ায়। দয়া করে কেউ খেতে দেয় কেউ তিরস্কার করে তাড়িয়ে দেয়। যখন নাছুর বান্দা খাবারের জন্যে বায়না ধরে খেতে হয় কিল-ঘুষি, বঞ্চনা আর সাহেবের হাতে লাঠি পেটা।

তারাও বাঁচতে চায়, তাদেরও একটি মন ও জীবন আছে

রাতের আঁধারে যখন শীত,বর্ষা ও গ্রীষ্মের প্রকট রৌদ্রে একটু সাহেবের প্রাসাদে আশ্রয় নিতে চাই শুনতে হয় গাল মন্দ ও আরো কত কি। শেষে আশ্রয় হয় ফুটপাতের সেই কুকুরের সাথে না হয় কোন বড় বৃক্ষের ছায়াতলে।

তারা সকলেই মানুষ।কেন সমাজ তাদের আলাদা করে রাখে? মানুষ তাদের সাথে মিশতে চাইনা। শুনতে চাইনা তাদের হ্রদয় নিঙ্গড়ানো বেদনার কথন। তাদেরও রয়েছে একটি মন। সমাজ চাইলেই পাল্টে দিতে পারে একটি জীবন। মানুষের অহমিকা ও লজ্জাবোধ কিছুই না।তাদের ভালোবাসা দিলেই পোষ মানবে। শুনতে চাইবে,বুঝতে চাইবে গুনিজনের কথন। তাদের ও রয়েছে আনন্দ- বেদনার কাহন।

জেলার শহরের লালদিঘীর পাড়, কোট বিল্ডিং, বাজার ঘাটা,সৈকতের লাবনী পয়েন্ট, কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল ও লিংক রোড়সহ আরো বিভিন্ন স্থানে এলোমেলো ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজারো ভবঘুরে মানসিক রোগী (পাগল) । তাদের কেউ কেউ মনুষ্যের হাতে লাঞ্ছিত ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে আর কেউ প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও গাড়ির নিচে পিষ্ট হয়ে প্রাণ সংকটে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ মে দুপুর প্রায় পৌনে ১ টা কক্সবাজারের একটি খাবার হোটেলে এক মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগল) ব্যক্তি হোটেল ম্যানেজারকে বলছে দুটো ভাত দিতে। সে যেন শুনছেই না তার কথা। পাগলটি একটু কাছে গিয়ে ক্ষিদের যন্ত্রণা বুঝাতেই ম্যানেজার দাম্ভিকতার সুরে চোখ লাল করে বলে এখান থেকে যা অন্য কোথাও দেখ।

ক্ষিদের জ্বালায় নড়তে পারছে না পাগলটি, সে ভাত ছাড়া যেন কিছুই বুঝতে চাই না। খাবারের জন্য বায়না ধরলে হোটেল ম্যানেজার থাকে চড় দিয়ে নোংরা ভাষায় গাল মন্দ করে বের করে দেয়। রাস্তার ধারে গিয়ে পাগলটি অঝোর কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে এক পথচারী তার অবস্থা বুঝতে পেরে ৩০ টাকা দেই, সে টাকা দিয়ে অবশেষে ওই হোটেলে তাকে ভাত খেতে হয়।

ভালো নেই এসব ভবঘুরে পাগলরা। ইট পাথরের এ জনপদে তাদের জন্যে কি রোগ নিরাময়ের কোন সুব্যবস্থা নেই? হয়তো তাদের মধ্যে কেউ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী চালিকাশক্তি। হয় কেউ কারো বাবা, মা, ভাই, বোন। যদি সরকারিভাবে তাদের সঠিক রক্ষণাবেক্ষন করে সু-চিকিৎসা দেয়া হয়,বাঁচতে পারে আলোয় আলোকিত হয়ে সুন্দর এ পৃথিবীতে হাজারো জীবন।

পিবিএ/টিএ/আরআই

আরও পড়ুন...