কয়লাখনির এমডি’র অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে ক্ষতিগ্রস্তদের আল্টিমেটাম

পিবিএ,ফুলবাড়ী,দিনাজপুর: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় খনি এলাকার দীঘিরপাড় মোড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী।

সমাবেশ থেকে আগামী ১০ জুনের মধ্যে কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অপসারণসহ ৬ দফা দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছে কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সংগঠন বড়পুকুরিয়া জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটি।

বড়পুকুরিয়া জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব মো. কালাম উদ্দিন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি মো. ইব্রাহিম খলিল। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. খাদেমুল ইসলাম, আলহাজ্ব মো. রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, উপদেষ্টা সদস্য মো. সুলতান মাহমুদ মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য মো. এনামুল হক, মো. শাহ পরান, মো. গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, কয়লাখনি সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যনাথপুর, বাঁশপুকুর ও চৌহাটি গ্রামবাসীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারকারী কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমানের অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর, চৌহাটির ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর ও চৌহাটি এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু সমাধান না করা পর্যন্ত কয়লা উত্তোলন বন্ধ রাখা, বড়পুকুরিয়া বাজার সংলগ্ন দেবে যাওয়া রাস্তার দ্রুত চলাচলের উপযোগী করা, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি বন্ধ করার ষড়যন্ত্রকারী ম্যানেজার মো. মোশারফ হোসেনের দ্রুত অপসারণ করা এবং ক্ষতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের যোগ্যতার বিত্তিতে চাকরি প্রদান করা।
বড়পুকুরিয়া জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহিম খলিল ও সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর সাথে কোন প্রকার আলোচনা না করেই খনি কর্তৃপক্ষ বৈদ্যনাথপুর, বাঁশপুকুর ও চৌহাটি গ্রামের বসতিপূর্ণ এলাকার ১৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। কয়লা উত্তোলনের ফলে ভূকম্পনে বৈদ্যনাথপুর, বাঁশপুকুর ও চৌহাটি গ্রামের ঘরবাড়ি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ফাটল দেখা দেওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি দেবে যাচ্ছে। এতে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠার মধ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। বিষয়গুলোর সমাধানের জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কর্তৃপক্ষ কোন সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছে না।

খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, খনির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে খনি এলাকা সম্প্রসারণের জন্য ১৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি চুড়ান্ত অনুমোদ পেতে অন্তত এক থেকে দেড় বছর লেগে যাবে। খনি এলাকা সম্প্রসারিত হচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরে খনির বদলীকৃত কিছু কর্মকর্তার উষ্কানিতে ইব্রাহিম খলিলসহ তার লোকজন প্রস্তাবিত অধিগ্রহণের এলাকায় নি¤œমানের ইট, বালু ও খোয়া দিয়ে ইমারত নির্মাণ কাজ করছে। যাতে করে অধিগ্রহণের সময় তিন থেকে চার গুণ অর্থ আদায় করতে পারে। কিন্তু নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। ইতোপূর্ভে ওই ইব্রাহিম খলিল বোড সভায় সকলের সামনে তাঁকে (এমডি) মারতে উদ্ধত হয়েছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে জানানো হয়েছে। এ কারণে ওই ইব্রাহিম খলিলকে খনিতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এছাড়াও ইতোপূর্বে অধিগ্রহণকৃত ৬৪২ একর জমির মূল্য পরিশোধের পরও এলাকাবাসী সেই জমি থেকে উঠে না দিয়ে তাদের দখলে রেখে ভোগদখল করে চলেছেন। এ বিষয়গুলো প্রতিবাদ করার কারণে ক্ষতিপূরণের অজুহাতে ভিত্তিহীন আন্দোলন করা হচ্ছে।

পিবিএ/ওআই/হক

আরও পড়ুন...