প্রসুতিসহ স্বজনদের আটকের অভিযোগে ক্লিনিক মালিক গ্রেফতার

পিবিএ, গৌরনদী ,বরিশাল: কোন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে না ডেকে নিজেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে প্রসুতিকে সিজারিয়ান অপারেশন করার চেষ্টা চালানো ও অপারেশনে রাজি না হওয়ায় প্রসুতিসহ তার স্বজনদেরকে আটকে রেখে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগে বরিশাল গৌরনদী সদরে আনোয়ারা ক্লিনিকের মালিক ,ফার্মাসিষ্ট মোঃ হেদায়েত উল্লাহ (৫৪) কে গ্রেফতার করে বরিশাল গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ। রোববার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানাগেছে, উপজেলার বাঘার গ্রামের মৃত হরলাল রায়ের ছেলে বিমল রায় (২৮) এর সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী অনিতা রায় (২৫) এর রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হটাৎ প্রসব বেদনা শুরু হয়। এর পর প্রসুতির স্বামী বিমল রায় ও তার স্বজনরা মিলে ওইদিন রাত ১১টার দিকে প্রসুতিকে নিয়ে গৌরনদী উপজেলা সদরের আনোয়ারা ক্লিনিকে যান। এ সময় ক্লিনিকের কর্মচারীরা প্রসুতিসহ তাদেরকে ম্যানেজারের রুমে বসিয়ে রেখে ক্লিনিকের মালিক ও পার্শ্ববর্তি বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিষ্ট মোঃ হেদায়েত উল্লাহকে ডেকে আনেন।

তিনি এসে প্রসুতির নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষার কাগজ পত্র দেখে প্রসুতিকে তার ক্লিনিকে ভর্তি হতে বলেন। তখন প্রসুতির স্বামী বিমল রায়সহ স্বজনরা তার কাছে জানতে চান ক্লিনিকে কোন অভিজ্ঞ চিকিৎসক আছে কিনা। জবাবে হেদায়েত উল্লাহ জানান, তিনিই অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং তিনিই প্রসুতির অপারেশন করবেন। এ সময় প্রসুতিসহ তার স্বামী স্বজনরা হেদায়েত উল্লাকে দিয়ে অপারেশ করাতে রাজি না হলে ক্লিনিক মালিক হেদায়েত উল্লাহ তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে অন্য রুম থেকে মশারী টানানোর রড় এনে সে প্রসুতির স্বামী ও তার স্বজনদেরকে এলোপাতারী পেটায়। এরপর ক্লিনিকের অন্যান্য কর্মচারীদের সহয়তায় তাদেরকে ওই ক্লিনিকের ম্যানেজারের রুমে আটক করে রাখে। সেখানে আটক অবস্থায় প্রসুতির স্বামী বিমল রায় ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে এ ঘটনা গৌরনদী মডেল থানাকে জানায়। তখন গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার ও ক্লিনিক মালিক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ (৫৪)কে গ্রেফতার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর পিবিএ’কে জানান, ক্লিনিক মালিক হেদায়েত উল্লাহ পেশায় একজন ফার্মাসিষ্ট। সে নিজেকে সিজারে অভিজ্ঞ এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচায় দিয়ে প্রসুতির সিজার করার চেষ্টা চালিয়েছে। প্রসুতির স্বামী ও স্বজনরা তাকে দিয়ে অপারেশন করাতে রাজি না হওয়ায় তাদেরকে রড দিয়ে পিটিয়ে রুমে আটকে রেখেছে। ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার ও ক্লিনিক মালিক হেদায়েত উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় প্রসুতির স্বামী বিমল রায় বাদি হয়ে মোঃ হেদায়েত উল্লাহসহ ক্লিনিকের ৩/৪জন অজ্ঞাতনামা কর্মচারীকে আসামী করে ওইদিন গভীর রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। গ্রেফতার হওয়া ক্লিনিক মালিক হেদায়েত উল্লাহকে সোমবার বিকেলে বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরন করে।

পিবিএ/কেএম/হক

আরও পড়ুন...