যশোরে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

পিবিএ,যশোর: ধনী গরীব নির্বিশেষে ঈদ উৎসব সবার। ঈদের দিন সবাই মিলে ঈদগায় এক সাথে নামাজ পড়বে। নামাজ শেষে কোলকুলি করবে। সব সময় এমনটাই হয়। কিন্তু ঈদ উৎসব রাঙানোর অন্যতম অনুষঙ্গ নতুন পোশাক কেনার ব্যাপারটি সম্পূর্ন উল্টোটি হয়।

আর্থিক সামর্থ্য সবার সমান না হওয়ায় ভিন্ন ভিন্ন ছাদের তলা থেকে কেনাকাটার এই পর্বটি সারতে হয়। যাদের সামর্থ্য বেশি তাদের কেনাকাটা হয় আলো ঝলমল শপিংমলে। যাদের কম তাদেরটা হয় মধ্যম গোছের বিপণীগুলোর কোথাও। আর যাদের সামর্থ্য একেবারেই কম কেনকাটার জন্য তাদের ফুটপাতের দোকানের উপরই নির্ভর করতে হয়।

যশোরে জমে উঠেছে ঈদ বাজার
যশোরে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

আয় রোজগার যার যেমনই হোক না কেন; পরিবার পরিজনদের নিয়ে সবাই এই দিনটি হাসি আনন্দে কাটাতে চাই। এজন্য ঈদ আসলে শুরু হয়ে যায় সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয়। এই সমন্বয় করেই চলে কেনাকাট। ঈদ ঘনিয়ে আসায় ইতিমধ্যে সেটি শুরুও হয়ে গেছে।

যশোর শহরের মুজিব সড়কের দড়াটানা থেকে জজকোর্টের মোড় পর্যন্ত দু’পাশে ফুটপাতের ওপর গড়ে ওঠা বাজারটিতে অল্প আয়ের মানুষের সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধ্যের মধ্যে থেকে পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কেনকাটার পালাা সারছেন অল্প বিত্তের মানুষেরা। এখানে তুলনামুলক কম দামের গার্মেন্টসের পোশাক পাওয়া যায়।

মুজিব সড়কের উপর গড়ে ওঠা এই বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোটদের টি-শার্ট ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পযর্ন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বড়দের টি-শার্টও একই দামে পাওয়া যাচ্ছে। ছোটদের শার্ট ২০০ থেকে ৪০০ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চাদের প্যান্ট পাওয়া যাচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায়। বড়দের প্যান্টের সর্বনিম্ন মূল্য ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে সব্বোর্চ ৬০০।

বড়দের শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ছোটদের ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকার পযর্ন্ত পাঞ্জাবি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বড়দের পাঞ্জাবির দাম একটু বেশি ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা। মেয়েদের জামা দাম ৫০০ থকে ১০০০ টাকা। মঙ্গলবার জেলা পরিষদ মার্কেটে মেয়ের জন্য জামা-জুতা কিনতে এসেছিলেন নাজির শংকরপুরের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রী জামসেদ মিয়া। ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে তার সংসার।

তিনি জানান, মেয়ে বায়না ধরেছে ভারতীয় সিরিয়ালে সে একটি জামা দেখেছে। কিন্তু মেয়ের দামি পোশাকের চাহিদা থাকলেও তাকে তার সাধ্যের মধ্যে থেকে সেটি কিনে দিতে হবে। এখানকার বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে তিনি মেয়ের জন্য জামা কেনেন তিনি। আলাপচারিতায় তিনি আরো বলেন, বড় দোকান থেকে পোশাক কিনতে গেল অনেক টাকা গুনতে হবে। সেটির সাধ্য নেই। তাই এখান থেকেই একটি পোশাক নিতে হল।

এসময় আরেক ক্রেতা যশোর শহরতলীর পুলেরহাট এলাকার সবুর খাঁ বলেন, আমি চাষী মানুষ। পরের জমি বর্গা করে আমার সংসার চলে। আর ৫-৬ দিন পর ঈদ। আমার কেনা-কাটা না হলেও ১ ছেলে ও মেয়েকে খুশি রাখতে তাদের নতুন জামা দিতে হবে।বড় বড় মার্কেট থেকে আমার পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। তাই ফুটপাত থেকে কম দামে ভালো জামা-কাপড় কিনতে এসেছি। অল্প টাকায় এখানে বেশ ভালো কাপড় পাওয়া যায়।

ডিসি অফিস চত্বরের একটি কাপড়ের দোকনের মালিক রমজান আলী জানান, রোজার শেষ দিকে এসে আমাদের ব্যবসা অনেক বেশ ভালোই হচ্ছে। ঈদে নতুন জামা-কাপড় কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। জামা-কাপড়ের দাম এখানে তেমন একটা বেশি না। ফলে ঈদ আসলেই এখানটাতে স্বল্প আয়ের মানুষের কেনাকাটার ভিড় লেগে যায়।

পিবিএ/জেডএইচ/আরআই

আরও পড়ুন...