পিবিএ,মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের একটি পুকুর পাড় থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। লাশ দাফনের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তরপাড়া গ্রামে তন্ন-তন্ন করে খুঁজে অবশেষে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সেই কলঙ্কিনী মায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ধানখোলা গ্রামের উত্তরপাড়া মৃত আব্দুল আজিজ ওরফে খোকনের স্ত্রী কমেলা খাতুন তার অবৈধ মেলা-মেশার পাপের ফসল নবজাতককে সমাজের চোখকে ফাঁকি দিতে পানিতে ফেলে দেয়। কমেলা খাতুন ২ কন্যা সন্তানের জননী। ইতোমধ্যেই বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। ছোট মেয়ের বয়স ১০ বছর। কমেলার স্বামী খোকন ৫ বছর আগে স্টক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সে থেকে কমেলা বিভিন্ন সময়ে সবজি ক্ষেতে অথবা তামাক ঘরে শ্রমিকের কাজ করে দিনাতিপাত করে আসছিল। বর্তমানে গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের তামাক ব্যবসায়ী মাসুদের আড়তে তামাক বাছাইয়ের কাজ করে। স্বামীর অবর্তমানে মিথ্যা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রতিবেশী শফিউল ইসলাম তার সাথে অবৈধ মেলা মেশা শুরু করে। এক পর্যায়ে সামাজিক চাপে তাদের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে ২/৩ মাস পর তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে শফিউল ইসলাম কমেলাকে ছেড়ে দেয়। তারপরও গোপনে শফিউল অবৈধ মেলামেশা বন্ধ করেনি।
প্রতিবেশীরা জানান, কমেলা কাজ করে বেড়ায়। কখন যে কাজে যায় আর কোন রাতে বাড়ি ফিরে আমাদের চোখে পড়ে না।
কমেলা পিবিএ’কে জানান, ঘটনা প্রকাশ করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আমার দেহ ভোগ করে আসছিল শফিউল। তার কথামতো আমার কলঙ্ক ঢাকতে আমি সন্তান মারার পর পানিতে ফেলে দিয়ে এসেছি। আরও জানা গেছে, মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে প্রতিবেশী শফিউল ইসলামেরও স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে রয়েছে।
শফিউলের স্ত্রী ভানুয়ারা খাতুন পিবিএ’কে জানান, আমার স্বামী আগে ঐ মহিলার কাছে যেতো। বর্তমানে আর যায়না। তবে এ ঘটনার পর থেকে শফিউল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছে।
তিনি আরো জানা যায়, রোববার দিনগত মধ্য রাতে ধানখোলা বাজারের পাহারাদার বছের আলী বাড়ি ফেরার সময় পুকুরের পাশে কমেলাকে দেখে ফেলে। সন্তান ডেলিভারী কাজে (দাই বা ধাত্রী)কে কে ছিল এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে কমেলা খাতুন বলেন,আমার সন্তান এমনিতেই প্রসব হয়েছে। কেউ ছিলো না। এমনকি বড় মেয়েও ঘরে থেকে জানতে পারেনি।
উল্লেখ্য,গত সোমবার সকাল ৮টার ধানখোলা বাজার সংলগ্ন জনৈক মুন্নাফ মিয়ার পুকুর পাড় থেকে একটি নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। যা গত সোমবার পিবিএ’তে প্রকাশিত হয়।
গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার (পিপিএম) পিবিএ’কে জানান,আমরা খবর পেয়েছি,নবজাতকের মা কমেলা খাতুনকে নিয়ে আসা হবে। সন্দেহভাজন শফিউল ইসলামকেও আটকের চেষ্টা চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিবিএ/জিএসএস/হক