স্ত্রীর লাশ অন্যের বাড়িতে রেখে পালালো স্বামী

পিবিএ,নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে স্ত্রীর লাশ অন্যের ফাকা বাড়িতে রেখে পালালো স্বামী ও তার শশুর বাড়ির লোকজন। পরে প্রতিবেশি লোকজন মরদেহটি নিয়ে তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে রাখেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ হাজির হয়ে স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং মরদেহটির সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। ঘটনাটি ঘটেছে গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের ঝাকড়া গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার মকিমপুর এলাকার মৃত-সবোর উদ্দিন এর মেয়ে রিমা(২৭) খাতুনের সঙ্গে ঝাকড়া গ্রামের আবুল হারেজের ছেলে মো.বাবু(৩০) এর অনেকদিন আগে বিবাহ হয়। তাদের দুইটা ছেলে সন্তান ও আছে। একজনের বয়স ৮ বছর আরেক জনের বয়স ৫ বছর। বাবু নেশাগ্রস্ত্র ছেলে। সে মাঝে মাঝেই নেশা করে বাড়িতে এসে তার স্ত্রী রিমাকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো।

স্ত্রীর লাশ অন্যের বাড়িতে রেখে পালালো স্বামী

অনেক দিন স্বামীর নির্যাতনে অসহ্য হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে রিমা গ্যাস ট্যাবলেট পান করে। তার কিছুক্ষণ পরে ঘটনা জানাযানি হলে শশুড় বাড়ির সবাই মিলে অটোযোগে রিমাকে নিয়ে যায় গুরুদাসপুর উপজেলা স্ব্যাস্থ কমপ্লেক্সে। গুরুদাসপুর উপজেলা স্ব্যাস্থ কমপ্লেক্স থেকে রিমার গুরুত্বর অবস্থা দেখে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। অ্যাম্বুলেন্স যোগে রাজশাহী যাওয়ার পথে বনপাড়া হাটিকুমড়ুল মহাসড়কে রিমা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তখন অ্যাম্বুলেন্স যোগে রিমার মরদেহ তার স্বামীসহ শশুড় বাড়ির লোকজন বাড়ির পাশে অন্যের ফাকা বাড়িতে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। তারা পালিয়ে যাবার পরে স্থানীয় প্রতিবেশিরা রিমার মরদেহ তার স্বামীর বাসায় রেখে পুলিশকে খবর দেয়।
মৃত রিমার মা গোলবাহার জানান, আমার স্বামী মারা গেছে ২০ বছর আগে। আমার ৬ সন্তান। তিন ছেলে তিন মেয়ে। আমি ভিক্ষা করে ও মানুষের বাসায় কাজ করে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। আমি এখনও ভিক্ষা করি।

যখন পারি তখনি রিমার বাড়িতে চাল, ডাল দিয়ে যাই। কারন আমার জামাই বাবু নেশা করতো। কাম কাজ ঠিক মতো করতো না। আমার মেয়েকে আমার জামাই বাবু শারিরিক মানষিক নির্যাতন করতো। তার নির্যাতনেই আমার মেয়ে বিষ পান করেছে। আমি বাবু সহ তার পরিবারের সকলের বিচার চাই।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা গুরুদাসপুর থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাঃ আনারুল ইসলাম বলেন, মৃত রিমার শশুড় বাড়ির লোকজন সবাই পালাতক আছে। স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞেসাবাদ করে ঘটনার বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি। গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক ময়েজ উদ্দিন মহিলা পুলিশের সহযোগিতায় মৃত দেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে নাটোর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ বিষয়ে মৃতের আত্মীয় স্বজন অভিযোগ দায়ের করার জন্য গুরুদাসপুর থানায় আসেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

পিবিএ/এনএইচ/বি.এইচ

আরও পড়ুন...