পিবিএ,নওগাঁ: দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে নওগাঁ সদর উপজেলার নারচি গ্রামে ক্ষুদে কবিরাজ নামে খ্যাত দিপুর কবিরাজি বন্ধ করে দিয়ে দিপু ও তার ২ সহযোগিকে আটক করে থানায় নিয়েছে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ। শুক্রবার (৩১মে)দুপুরে পুলিশ এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারচি গ্রামে অভিযান চালিয়ে দিপুর কবিরাজি কার্যক্রম বন্ধ করে দেবার পাশাপাশি দিপু এবং তার আশ্রয়দাতা নারচি গ্রামের হারুনুর রশিদ ও তার স্ত্রী সেলিনা আকতারকে আটক করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসি ও পুলিশ জানান, নওগাঁ সদর উপজেলার সরিজপুর গ্রামের মো: আলম হোসেনের ছেলে ১১ বছরের শিশু দিপু প্রায় ২ বছর ধরে সরিজপুর গ্রামে কবিরাজি চালিয়ে আসছিল। ফু দিয়ে পানিপড়া, তেল ও তাবিজের ব্যবহারে বন্ধ্যা নারীরা অন্তসত্ত্বা হওয়া সহ নানা রোগের চিকিৎসা সেবা দেয় এই দিপু কবিরাজ। পানিপড়ার জন্য ২০ টাকা ও তাবিজের জন্য ১৩০ টাকা সহ প্রতি রোগীর কাছ থেকে নেওয়া হত ১৫০ টাকা। সপ্তাহে ৩ দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৩ হাজারের বেশী রোগী আসে তার কাছে চিকিৎসা নিতে।
দীপুর চিকিৎসা আদৌ চিকিৎসা না কি প্রতারনা এ নিয়ে গ্রামবাসী বিভক্ত হয়ে পড়লে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে গত এপ্রিল মাসে কবিরাজি বন্ধ করে দেন নওগাঁ সদর থানা পুলিশ। এরপর গত একমাস যাবত পাশের নারচি গ্রামের হারুনুর রশিদের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে তার মা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পুন:রায় কবিরাজি শুরু করে দিপু।
পাশাপাশি প্রচুর রোগীর সমাগমে শুরু হয় সিরিয়াল বানিজ্য। আগে সিরিয়ার পাবার জন্য কোন কোন রোগীকে গুনতে হচ্ছে ৫০০ টাকা এমন অভিযোগও রয়েছে। যারা অন্তসত্বা হবার চিকিৎসা নেন তাদেরকে চিকিৎসা নেওয়ার এক পর্যায়ে খাঁসি জবাই করে কবিরাজ ও তার সহযোগিদের খাওয়াতে হয়। এ কারনে প্রতি সপ্তাহে ৭ থেকে ১০ টি খাঁসি জবাই করে খাওয়াতেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
এ অবস্থায় এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ দিপুর কবিরাজি বন্ধ করে দেন এবং তার সহযোগি ২জনকে আটক করেন। দিপুর বিরুদ্ধে কিশোর অপরাধ আইনে এবং অন্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নওগাঁ সদর থানার ওসি সোরওয়ার্দী হোসেন।
পিবিএ/এস/আরআই