ঝড় বৃষ্টির সময় অস্থায়ী চা শ্রমিকদের দূর্ভোগ

পিবিএ,মৌলভীবাজার: চারো দিকে দুর্গম পাহাড় উচু উচু টিলা মাটি ভাঙ্গা বেড়ার ঘর, উপরে ছনের ছাউনি সেখানেই তাদের আবাসস্থল। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি চা বাগানের দুর্গম পাহাড়ে মাটির ভাঙ্গা ঘরে ছন ও খড়ের ছাউনি দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয় চা শ্রমিক সরস্বতী মহালি, হাজেরা বেগম ও নিয়তি কর্মীরকে।

কমলগঞ্জের ফুলবাড়ী চা বাগানের ৮ নাম্বার লাইনে সরজমিনে গিয়ে আলাপকালে জানা যায়,সরস্বতী মহালি,হাজেরা বেগম,নিয়তি কর্মী চা বাগানের অস্থায়ী চা শ্রমিক বিধায় তারা চা বাগান কর্তৃপক্ষ থেকে কোন ধরনের রেশন ভাতা পায় না। এমনকি ভাঙ্গা ঘর সংস্কারের জন্য কোন আর্থিক সুবিধাও পান না৷ ফলে ভাঙ্গা ঘরেই ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। সরস্বতী মহালি,হাজেরা বেগম পিবিএ’কে বলেন বৃষ্টি আসলে ঘরের মধ্যেও বৃষ্টির পানি পরে,যদি ঝড় তুফান আসে রাতে ঘুমাতে পারি না, কখন যে ঘর ভেঙ্গে যায় এ জন্য রাত জেগে থাকতে হয়।

সরস্বতী মহালি,হাজেরা বেগম, প্রায় পাঁচ(৫) বছর ধরে চা বাগানে কাজ করেন কিন্তু এখনো তাদেরকে স্হায়ী শ্রমীক করা হয় নি।ফুলবাড়ী চা বাগানের ঘুরে দেখা যায়় সরকারিভাবে বৈদ্যুতিক লাইন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হতদরিদ্র চা শ্রমিকরা অর্থের অভাবে নিজের আবাসস্থল মেরামত ও বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং করতে পারছেন না বিধায় বিদ্যুতের সংযোগ ও পাচ্ছেন না। প্রতি সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করে ছয় শত(৬০০) টাকা বেতন পান, এটা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায় সেখানে কিভাবে ঘর মেরামত ও বৈদ্যুতিক ওয়ারিং করবেন হতদরিদ্র চা শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরীর সাথে ফোনে আলাপ করলে তিনি পিবিএ’কে বলেন বাগানে অস্থায়ী শ্রমিক মূলত কিছুদিনের জন্য কাজ করে তারা নিয়মিত কাজ করেন না বিধায় অস্থায়ী রাখা হয়। তবে যারা স্থায়ী শ্রমিক তাদেরকে বাগান কর্তৃপক্ষ পাশাপাশি আবাসনের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করে। তিনি উক্ত বিষয়টি নিয়ে বাগান ব্যবস্থাপকের সাথে আলাপ করবেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশ শ্রম আইন চা শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ চা শ্রমিকরা এ আইন অনুসরণ করে না, তারা তাদের নিজেদের মতোই কাজ করে।

আরো জানতে ফুলবাাড়ি চা বাগান (এগ) জেনারেল ম্যানেজারের সাথে মোবাইল ফোনে আলাপ করলে তিনি পিবিএ’কে বলেন চা বাগান কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি একর চা বাগানে জন্য একজন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ফুলবাড়ী চা বাগানের আয়তন অনুযায়ী শ্রমিক পরিপূর্ণ থাকায়, চা বাগাান কর্তৃপক্ষ নতুন ভাবে কোন চা শ্রমিক নিয়োগ করছেন না, বিধায় অনেকেই অস্হায়ী ভাবে চা বাগানে কাজ করছেন। আমরা তাদের কে স্হায়ীভাবে নিয়োগ করতে পারছি না।

যদি কোন স্হায়ী শ্রমীকের শূন্য পদ হয়, তাহলে আমরা ( বাগান কর্তৃপক্ষ) অস্থায়ী চা শ্রমিক থেকে স্থায়ী চা শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা হবে। তিনি আরো বলেন বাগানের স্থায়ী শ্রমিকরা বাগান কর্তৃপক্ষ থেকে রেশন ভাতা এবং আবাসনের জন্য সুব্যবস্থা পেলেও অস্থায়ী শ্রমিকরা এই সুবিধাটি পাচ্ছেন না।

পিবিএ/এমএএম/এমএসএম

আরও পড়ুন...