প্রবাসীর নিঃসঙ্গ ঈদ

পিবিএ ডেস্কঃ আমরা যারা বাংলাদেশে থাকি আমাদের সপ্ন থাকে বড় হয়ে বিদেশ যাবো। বিদেশ কথাটা মানেই অনেক টাকা আর সুখ ও আনন্দের আর আরাম আয়েশ এর যায়গা। যেখানে কখনো বিদ্যুৎ যায় না , রাস্তা-ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। দেখার মত সুন্দর একটি যায়গা লাইফ স্টাইল পরিবর্তন হইয়া যাবে।ঠিক এই রকম চিন্তা থাকে আমাদের বাংলাদেশিদের মনে। তবে বর্তমানে এই ব্যাপারটা নতুনদের মনে এতো সপ্নের সৃষ্টি করে না।

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। সাম্য আর শান্তির বার্তা নিয়ে প্রতিবছর হাজির হয় ঈদ। ঈদের জোয়ারে সাঁতার কাটে সকলে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্কদের আকাশেও উঁকি দেয় শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ। বেজে উঠে উৎসবের সাইরেন। ছুঁয়ে দেয় প্রতিটি হৃদয়। এক রশিতে আটকে যায় বিশ্বাসী অন্তর। মুসলিম মিল্লাতের স্বতন্ত্র ইবাদত হলেও তা আজ ভেঙে ফেলেছে জাতিগত দেয়াল। সবাই মেতে উঠে মিলনের আনন্দে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়।

কিন্তু এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের কাছে ঈদ আনন্দ নিয়ে আসে না। তারা হলেন প্রবাসী ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা। যারা নিজের কথা না ভেবে পরিবার ও দেশের জন্য নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রকৃত পক্ষে আমরা যারা প্রবাসে থাকি তাদের দেহ থাকে বিদেশে আর মন পড়ে থাকে দেশে। প্রতিটি মুহূর্তে আমরা দেশ ও পরিবার নিয়ে ভাবতে থাকি। প্রবাস জীবন মানেই সংগ্রামী জীবন। উন্নয়নের সংগ্রাম। এ জীবন কর্মমুখর প্রতিনিয়ত। সংগ্রাম করে চলতে হয় এখানে।

ফজরের আজানের পর দল বেঁধে ছোটাছুটি করে গোসল সেরে মিষ্টি মুখে নতুন জামা-কাপড় পরে ঈদগাহ মাঠে যাওয়া প্রবাসীদের জন্য যেন শুধুই স্মৃতি। নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কেউ ডাক দিয়ে বলে না, সেমাই খেয়ে যাও। দীর্ঘ কর্মব্যস্ততার পর ঈদের ছুটিতে লম্বা ঘুম অধিকাংশ প্রবাসীর ঈদের দিনের মূল কর্মসূচি।ঈদের নামাজ শেষে দেশে ফোন করার পর বুকের ভেতর কষ্টের তীব্রতা যেন আরও বেড়ে যায়। বুকফাটা যন্ত্রণাকে বুকে নিয়ে বিছানায় গিয়ে চোখের পানিতে বালিশ ভিজিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেন অনেকে। এরপর দুপুর গড়িয়ে পুবের সূর্যটা পশ্চিমে হেলতে শুরু করে। বিছানা ছেড়ে দু-একজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সামান্য আনন্দের প্রত্যাশায় অজানার উদ্দেশে ছুটে যান। এভাবেই কেটে যায় প্রবাসীদের ঈদ নামের নিঃসঙ্গ বেদনার দিনটি।

পিবিএ/এমএস

আরও পড়ুন...