সুদানে সেনাদের নির্বিচার গুলি, নিহত বেড়ে ১০০ ছাড়িয়েছে

পিবিএ ডেস্ক: সুদানের রাজধানী খার্তুমে বিক্ষোভরত জনতার উপর ট্রানজিশনাল মিলিটারি কাউন্সিল (টিএমসি) বাহিনীরনির্বিচার গুলিতে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।

সামরিক বাহিনীর সদরদফতরের সামনে ‘গণতন্ত্রকামী’ নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পর পার্শ্ববর্তী নীলনদ থেকে ৪০ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এই ৪০ জন ‘গণতন্ত্রকামী’ বিক্ষোভকারী ছিলেন বলে জানাচ্ছে আন্দোলনকারীদের সমর্থক সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদান ডক্টরস (সিসিএসডি)। খবর গার্ডিয়ানের।

গত সোমবার খার্তুমে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে ওই হামলার পর বুধবার রাতে সিসিএসডি এ খবর জানায়। এর আগে হামলায় ৬০ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০০ জনে।

দীর্ঘদিন থেকে দারিদ্র্যতায় পিষ্ট সুদানে গত বছর থেকে তেল ও রুটির দাম বাড়ানোয় দেশটির প্রেসিডেন্ট বশির আল ওমরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে বিরোধীরা ও সাধারণ মানুষ।

বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ওমর। এতে করে সামরিক বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মাঝে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে, বিক্ষোভকারীদের এ আন্দোলন রুপ নেয় সরকার পতনের ডাক হিসেবে।

গত ৬ এপ্রিল থেকে খার্তুমে সামরিক বাহিনীর সদর দফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

এসব ঘটনার জেরে ১১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট বশিরের পদত্যাগ ঘোষণা করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এতে আনন্দে মেতে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সে আনন্দ ছিল কিছু মুহূর্তের মাত্র। কারণ বশিরের পদত্যাগের পর ক্ষমতা নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী।

পরে সামরিক বাহিনীকে বশিরেরই অংশ হিসেবে দাবি করে ফের বিক্ষোভ করতে থাকে আন্দোলনকারীরা।

এদিকে, ব্যাপক আন্দোলনের মুখে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে, আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে বিক্ষোভকারীরা।

তারা বলছেন, ওই প্রস্তাব আন্তরিক নয় কারণ নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ সপ্তাহেই তাদের অতর্কিত হামলায় অন্তত ৬০জন নিহত হয় বলে জানায় তারা।

সুদানের প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র মোহাম্মদ ইউসেফ আল মোস্তাফা বুধবার বলেছেন, জেনারেল আব্দুল ফাতাহ বোরহান আলোচনার যে আহ্বান জানিয়েছেন তা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার মত নয়। কারণ, তার অধীনস্থ সেনারা সুদানী জনগনকে হত্যা করেছে এবং এখনও করছে।

১৯৮৯ সালে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থাকাকালে ওমর আল-বশির ‘অভ্যুত্থান’ ঘটিয়ে তৎকালীন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল-মাহদীকে উৎখাত করেন। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেন তিনি।

সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...