পিবিএ,নরসিংদী: নরসিংদীর পলাশে দায়িত্ব পালনের সময়ে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগ। এ সময় পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক মারধর ও পুলিশের ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেন ছাত্রলীগ সদস্যরা। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
এ ঘটনায় রবিবার (৯জুন) দুপুরে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর রবিবার (৯জুন) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো- পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজন (৩২), সুমন মিয়া (২৫), শফিকুল ভূইয়া (২৪), জাহির (১৯), শুভ মিয়া (২০) ও রাজন (২৭)।
তারা সবাই চরসিন্দুর ইউনিয়ের বাসিন্দা। পলাশ থানা পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ হতে ছাত্রলীগের কয়েক জন পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর নতুন ব্রিজে ঘুরতে আসেন। ওই সময় তারা ব্রিজের এক পাশে বসে তাস খেলছিলেন। এ সময় হৃদয় নামে স্থানীয় এক যুবক তাদের তাস খেলতে বারণ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে কালিগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ছাত্রলীগ সদস্যরা বিষয়টি পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনকে জানান। এরই জেরে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতির লোকজন হৃদয়কে মারপিট করতে থাকে। খবর পেয়ে চরসিন্দুর ক্যাম্পের পুলিশের একটি দল সেখানে যায় এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়।
কিন্তু তারা পুলিশের কথা অমান্য করে দুই পক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনের ওপর লাঠির আঘাত লাগে।
পুলিশ জানায়, এতে ছাত্রলীগ নেতার সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা পুলিশকে মারপিট করেন। একই সঙ্গে পুলিশের গায়ে থাকা ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেন।
এ সময় আহত হন চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই প্রদিপ কুমার দাশ, কনস্টেবল জাহিদ, নাদিম, গাইয়ুম ও নায়েক আলামিন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদিপ কুমার দাশ বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে পলাশ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে রবিবার (৯জুন) দুপুরে পুলিশ পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদিপ কুমার দাশ বলেন, চরসিন্দুর ব্রিজ এলাকায় দুই পক্ষের মারপিট হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে যাই। দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং পুলিশের ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় তাদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
বিষয়টি জানতে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মহামন্দা ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেনি।পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা বলেন, পুলিশকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
পিবিএ/আরআই