ফুলছড়িতে বন্যার তিন বছর পরও নির্মাণ হয়নি সেতুটি

পিবিএ,গাইবান্ধা: গাইবান্ধা-বোর্ডবাজার-ফুলছড়ি উপজেলা সড়কের সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের বোয়ালী গ্রামে তিন বছর পূর্বে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সেতুস্থলে নির্মাণ করা হয়নি একটি নতুন সেতু। চলাচলের জন্য ওই সেতুর পাশে তৈরি করা হয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো। সাঁকোটির উপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার শিক্ষার্থীসহ লক্ষাধীক মানুষকে।

সদর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই রাতে ফুলছড়ির সিংড়িয়ায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে যমুনা নদীর পানির স্রোতে সেঁতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিচের মাটি ক্ষয়ে যাওয়ায় ২০১৭ সালের ২০ জুন মাসে সেতুটি দক্ষিণ দিকে বেশি পরিমাণে হেলে গেলে তখন থেকে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত এ সেতুর পাশে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়।

এই পথে চলাচলকারী সোহেল রানা, রফিক মিয়া, আব্দুস সামাদ, খোকন মিয়াসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা পিবিএ’কে বলেন, ভালো থাকা অবস্থায় সেতুর উপর দিয়ে খুব সহজেই চলাচল করতে পেরেছি। সেতু না থাকায় এখন সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

ধান ব্যবসায়ী আবুল কালাম পিবিএ’কে বলেন, সেঁতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকেই ট্রলিতে করে ফুলছড়ির কালিরবাজারে ধান নিয়ে যেতে পারছি না। ভ্যানে করে নিতে গিয়ে বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। সাঁকোতে ধানবোঝাই ভ্যান উঠলে ভেঙ্গে যাওয়ার আতংকে থাকি।

অটোবাইক চালক মিজানুর রহমান পিবিএ’কে বলেন, সেঁতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকেই এ পথে মানুষের চলাচল কমে গেছে। তাই আগের মতো আর রোজগার হয়না। বেশি টাকা ও সময় লাগলেও মানুষ অন্য পথে বেশি এলাকা ঘুরে চলাচল করছে। এ পথে চলাচল করতে গিয়ে কষ্ট পেতে হচ্ছে গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ্য মানুষকে।

বোয়ালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ এম মাজেদ উদ্দিন খান আব্দুল্লাহ পিবিএ’কে বলেন, গত ২৬ এপ্রিল ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে ভ্যানে করে গাছের গুড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় ভেঙ্গে গিয়ে প্রায় ১৫ দিন ওই সড়কে যানবাহনের চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেটি মেরামত করা হয়। বর্তমানে সাঁকো দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল করতে না পারায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার মানুষদের। এখানে একটি নতুন সেঁতু তৈরি করা খুবই প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বৈঠকে আলোচনা হলেও কোন কাজ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ পিবিএ’কে বলেন, ওই সড়কটি দিয়ে শহরমুখী আমার উপজেলার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত সেঁতুটি আমার এলাকার বাহিরে হওয়ায় নতুন সেঁতু নির্মাণে গাফিলতি করা হচ্ছে।

সদর উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ মোল্লা পিবিএ’কে বলেন, সাত মাস আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে ব্রীজ-কালভার্ট মেরামত প্রকল্পে একটি নতুন সেঁতু তৈরির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি পাশ হয়নি। দ্রুত এখানে একটি সেঁতু নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

পিবিএ/এমএসএইচ/এমএসএম

আরও পড়ুন...