সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী পানীয় গাওয়া

সৌদি চা গওয়া

পিবিএ ডেস্ক: আরব সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্যবাহী পানীয় হচ্ছে গাওয়া বা আরবীয় কফি। প্রথাগতভাবে এটি বাড়িতে বা বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য অতিথিদের সামনে পরিবেশিত হয়। গাওয়া সাধারণত ছোট একটি কাপে বেশ সময় নিয়ে ছোট ছোট চুমুকে খেতে হয়। তবে গল্পে মশগুল থাকলে দুই তিন কাপও অনেকে খেয়ে নেন। এটা একটি ছোট আকারের বিশেষ কাপে পরিবেশিত হয়। এর কোনো হ্যান্ডেল নেই। বিশেষ এই কাপকে ফিনজান বা ফেনজান বলে।

গাওয়া সৌদি আরবে বহুল প্রচলিত পানীয়। কাপে করে চায়ের মতো পান করতে হয় গরম-গরম। গরম পানিতে বিভিন্ন ধরনের মসলা দিয়ে এটা তৈরি করা হয়। গাওয়ার বয়াম বা টিন কিনতে পাওয়া যায়। কেউ কেউ বলেন, এটা খেলে শরীর চাঙা হয় এবং কর্মস্পৃহা বাড়ে। গলায় খুশখশে কাশি থাকলে সেরে যায়। এতে কোনো চিনি দেওয়া হয় না। অনেকে খেজুর দিয়ে খান। গাওয়া খেজুরসহ খেতে বেশ ভালো লাগে।

এই কফি পরিবেশনকারী (ওয়েটার) ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে অতিথিদের তাঁর ফাস্ক থেকে গাওয়া ঢেলে দেন। অতিথিকে বেশি সম্মান জানাতে বাড়ির কিশোর ছেলেকে দিয়েও গাওয়া পরিবেশন করান অনেকে।
গাওয়া বানানোর পদ্ধতি খুবই সহজ।

গাওয়া দেখতে গোল্ডেন কালারের। শাহী মশলার মিশ্রণ থাকায় এটি অত্যন্ত সুগন্ধময়। চা বা কফির ফ্লেভারের চেয়ে এর স্বাদ সম্পূর্ণ অন্যরকম। অার উপকারিতা তো অবিশ্বাস্য!

গাওয়া শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে। অধিকাংশ মেডিকেল গবেষণায় প্রমাণিত হয়, এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সারসহ আরো অনেক রোগ প্রতিরোধ করে। পান করার পর মূহূর্তেই শরীরে ফিরে আসে চনমনে সজিবতা। কর্মক্ষমতা বাড়নো এবং পৌরুষ ধরে রাখতে আরবরা এটি নিয়মিত পান করে থাকেন।

উপাদান:

১. গরম পানি ১ কাপ
২. গাওয়া ১ বা ২ চা-চামচ
৩. এলাচির গুঁড়া/লবঙ্গের গুঁড়া অল্প পরিমাণ

প্রণালি:

প্রথমে একটি কেটলিতে পানি ঢেলে খুব বেশি করে ফুটিয়ে নিতে হবে। সেই ফুটন্ত পানিতে গাওয়া বা কফির গুঁড়া দুই চামচ ঢেলে খুবই হালকা আঁচে ২০ মিনিট ফুটাতে হবে। কেটলির ঢাকনাটি অবশ্যই বন্ধ থাকবে।
এরপর চুলা থেকে কেটলি নামিয়ে অল্প পরিমাণ লবঙ্গ, এলাচির গুঁড়া দিয়ে সবকিছু ভালো করে নেড়ে নিতে হবে। চুলায় উঠিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এভাবেই হয়ে গেল গাওয়া বা আরবি কফি। মনে রাখবেন, গাওয়াতে কোনো চিনি বা দুধ মেশাতে হয় না।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...