ঈদের আনন্দ উদযাপনের এখন অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে নতুন ছবি দেখা। তাই ঈদকে কেন্দ্র করে ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে চিত্রপুরিতে থাকে বাড়তি প্রস্তুতি। এ সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিতেও থাকে ঈদের আনন্দমুখর আবহ। ঝাঁকানাকা নাচ আর গল্পে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়ার নানা প্রচেষ্টা নিয়েই মুক্তি পায় ঈদের ছবিগুলো। ব্যতিক্রম হয়নি এবারের ঈদেও। এবারের ঈদের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেযেছে তিন ছবি ‘পাসওয়ার্ড’, ‘নোলক’ ও ‘আবার বসন্ত’। কেমন হলো এবারের ঈদের ছবি সে বিষয় নিয়েই এ আয়োজন…
নকল করে পাস ‘পাসওয়ার্ড’
প্রায়ই অভিযোগ ওঠে শাকিব খান থাকলে অন্য নায়ক অভিনীত দৃশ্য সম্পাদনা করে ফেলে দেওয়া হয়। তবে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে শাকিব যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ইমনও ঠিক ততটাই। বরং ইমনের কাছে পেনড্রাইভ আসার পর থেকে মূল গল্প শুরু হয়। এই গল্পের প্যাকেজিং শাকিব খানের আর দশটা ছবি থেকে আলাদা হলেও, প্রযোজক যেহেতু শাকিব খান, বাজেটও বেশ চড়া। মুক্তির আগে যেহেতু বলা হয়েছে ছবিটি বিশ্বমানের- স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার পাল্লাও বেড়ে গিয়েছিল দর্শকদের। এটা ঠিক, পরিচালক মালেক আফসারী ২ ঘণ্টা ১৭ মিনিটে দর্শকদের বিনোদনমূলক একটি গল্প উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আবদুল্লাহ জহির বাবুর গল্পে গতিও ছিল। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই গল্পটিও শাকিবের প্রথম প্রযোজিত ‘হিরো দ্য সুপারস্টার’ [তেলেগু ছবি ‘রেবেল’]-এর নকল, মৌলিক নয়। শাকিবের ‘পাসওয়ার্ড’ ফ্রেঞ্চ ছবি ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক’ ও কোরিয়ান ছবি ‘দ্য টার্গেট’-এর কাট-কপি-পেস্ট।
যদিও শাকিব খান ধারকৃত কাহিনীর বাংলায় চিত্রায়ণের পেছনে টাকার সঠিক ব্যবহার করেছেন। সিংহভাগ অংশের শুটিং বিএফডিসিতে না করে সত্যিকারের হাসপাতাল, শিশুমেলা, শপিং মলসহ বাস্তবিক লোকেশনে চিত্রধারণ হয়েছে। ছবির গল্পে মূল নায়কের পেশা এড়িয়ে যাওয়া, বাড়িওয়ালা তার নিজের মেয়েকে ছোটবেলা থেকে চেনেন না অথচ মৃত্যুর পর তাকে হুট করে শনাক্ত করা, নায়িকার চরিত্রের ব্যক্তিত্ব কমিয়ে আইটেম গানের সংযুক্তি, একজন ডাক্তারের যুক্তি ছাড়াই নায়কের প্রেমে পড়া এবং পরে নায়ক-নায়িকার জন্য মন পাগল হওয়াসহ আরও বেশকিছু অসঙ্গতি রয়েছে ছবিতে। তাছাড়া বিশ্বমান দাবি করা একটি চলচ্চিত্রে গুলির ভিএফএক্স ও শব্দ এখনও বেশ সেকেলে। থ্রিলার-অ্যাকশন ছবির অ্যাকশন বিশ্বমানের হবে প্রত্যাশা করেও ফল পাইনি। অহেতুক ‘কমেডি’ পর্ব কমিয়ে ক্ষুরধার করা যেত ছবিটিকে।
তবে এসব সীমাবদ্ধতাকেই শাকিব খান তার পর্দায় উপস্থিতি দিয়ে দূর করে দিয়েছেন। ‘রুদ্র’ চরিত্রে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ‘পাসওয়ার্ড দিয়েছি, কিন্তু ক্যাশ করতে পারবি না’- শাকিব খানের এই সংলাপ বলার ধরন মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। অন্য চরিত্রদের অভিনয় করার জায়গা দেওয়ার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ পাবেন তিনি। বিশেষ করে ইমনের সঙ্গে তার ‘ভাই-ভাই জুটি’ ভবিষ্যতে আরও দেখতে চাই। ইমন এ ছবির বিস্ময়। দীর্ঘদিন চলচ্চিত্রে কাজ করলেও ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে ইমন দশে দশ। তাকে যে চরিত্রে নির্বাচন করা হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। ইমনকে ধন্যবাদ, একজন নায়ক হয়েও এ ধরনের চরিত্র নির্বাচন করে নিজের সেরাটুকু দেওয়ার জন্য। নায়িকা বুবলীও এ ছবিতে ভীষণরকম সাবলীল। গানের দৃশ্যে মুগ্ধ না করলেও পুরো ছবিতে বুবলী অতীতের সব পারফরম্যান্সকে ছাড়িয়ে বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করেছেন। এমনকি অ্যাকশন দৃশ্যেও বেশ সাবলীল তিনি। মিশা সওদাগর এ ছবির আরেকজন সফল তারকা। তার চরিত্রটি যেভাবে শুরু হয়েছে কিংবা তার ম্যানারিজম/ কথা বলার স্টাইল/ মাটিতে বসে পড়ার স্টাইল কিংবা কিছু সংলাপ প্রক্ষেপণের ধরন [আমি টাকা পেলে তোর কী? / এই দুনিয়ায় সবাই অসুস্থ/ রুশো, তুমি ভালো আছো? কিছু খাবে তুমি? / আমার মাথায় চুল কম, ভুলও কম/ আই হ্যাভ নো ফিয়ার, ভিক্টর ইজ হেয়ার] দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে।
আরেকটি বিষয়ে ধন্যবাদ না দিলেই নয়, অ্যাকশন-থ্রিলার ছবিতে গানের আধিক্য ছিল না। তবে কোনাল ‘আগুন লাগাইলো’ দারুণ গাইলেও বিরতির আগে এ ধরনের অযৌক্তিক গান বুবলীর চিকিৎসক চরিত্রের ব্যক্তিত্ব খর্ব করেছে।
‘পাসওয়ার্ড’ ছবির আবহ সঙ্গীতে ইমন সাহা তার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শিল্প নির্দেশনা আরও অত্যাধুনিক হতে পারত [বিশেষ করে গাড়ি নিয়ে সেট ভেঙে ফেলার দৃশ্য]। রঙ বিন্যাস ঢাকাই ছবির তুলনায় বেশ ভালো : ঝকঝকে, চকচকে। সর্বোপরি, মালেক আফসারী পরিচালিত ঈদের ছবি ‘পাসওয়ার্ড’ শাকিব খানের সাম্প্রতিক সময়ের দেশীয় প্রযোজনার তুলনায় মোটামুটি উপভোগ্য হলেও দিন শেষে একটি ‘নকল চলচ্চিত্র’ হিসেবেই স্বীকৃতি পেল। শাকিব খান চাইলে তো সবই সম্ভব। নকল গল্প নিয়ে ধারাবাহিকভাবে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করা কি খুব জরুরি?
বিবর্ণ বসন্ত নিয়ে ‘আবার বসন্ত’
জীবনমুখী গল্প নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র সাম্প্রতিক সময়ে খুব একটা দেখা যায়নি। সেই তুলনায় ‘আবার বসন্ত’ দর্শকদের প্রত্যাশার পালে কড়া নেড়েছিল। ষাটোর্ধ্ব বয়স মানেই কি মৃত্যুর পথে হাঁটা? এই বয়সে দাঁড়িয়ে কি স্বপ্ন দেখা বারণ? হাসতে মানা? প্রাণ খুলে বেঁচে থাকা মানা? অনন্য মামুনের নতুন চলচ্চিত্র মুক্তির আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল, দেশের বাইরে এ ধরনের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের গল্প নিয়ে তেমন কাজ হয়নি। ‘আবার বসন্ত’ ছবির প্রথম দৃশ্যে তারিক আনাম খানের ‘ইমরান চৌধুরী’ ও আনন্দ খালেদের ‘আজিজ’ চরিত্রের গাড়িতে বসে থাকা সংলাপ বিনিময় এবং তারিক আনাম খানের মতো শক্তিমান অভিনেতার সংলাপ [সোশ্যাল সাইটের জন্য সামাজিক বন্ধন কেমন আলগা হয়ে যাচ্ছে] শুনে দারুণ লাগে। দর্শকরাও আশায় বুক বাঁধেন বাংলা ছবিতে নতুন এক বিপ্লব রচিত হতে যাচ্ছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, দৃশ্য যতই এগিয়েছে, ততই বিভ্রান্ত হয় দর্শক। যুক্তির দরজায় দর্শকদের অসংখ্য প্রশ্ন কড়া নাড়ে :শ্বশুর ও তার সন্তানদের সামনেই মেয়ের জামাইয়ের সংলাপ :আমি আগেই বলেছিলাম তোমাদের বাবা একটা চরিত্রহীন! কী আশ্চর্য। ইমরান চৌধুরী যে চরিত্রহীন তার কোনো ব্যাখ্যা গল্পে নেই। আর যদি তিনি চরিত্রহীন না হয়েই থাকেন, একজন সন্তানও কেন প্রতিবাদ করলেন না? যতই তারা স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক হোক। বাবা তো! স্পর্শিয়া-তারিক আনাম খানের প্রথম সাক্ষাতের সব কথা আড়াল থেকে শোনেন কাজের বুয়া। কিন্তু শুধু একটি সংলাপ [৬ মাস লিভ টুগেদার করতে হবে] শুনেই তিনি বিস্মিত হয়ে পড়েন। বুয়ারাও লিভ টুগেদার কনসেপ্ট স্পষ্টভাবে বোঝেন? স্পর্শিয়ার মায়ের নতুন সংসারের প্রতিটি দেয়ালে কুরুচিপূর্ণ ছবি কেন [শিল্পকর্ম নয়]? তাদের চরিত্র তো নিস্কলঙ্কই দেখানো হয়েছে।
শেষদিকে এমন কী হয়ে গেল যে, তারিক আনাম খানের ছেলে ইমতু স্পর্শিয়ার ওপর চড়াও হলো? ভালো হোক কিংবা মন্দ- অভিনব গল্পের এ জায়গা থেকে পুরোপুরি গৎবাঁধা ফর্মুলায় নির্মিত হয়েছে ‘আবার বসন্ত’। বাস্তবিক চরিত্রের চলচ্চিত্রটি আদালতের দৃশ্য পুরোপুরি ‘ফিল্মি’ হয়ে ওঠে। এই দৃশ্যে স্পর্শিয়ার মা-বাবা নেই কেন? তারিক আনামের মেয়ে মনিরা মিঠু নেই কেন? ২ ঘণ্টা ২৩ মিনিটের গল্পে দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যও আছে বেশকিছু। সংলাপের আবহে লোকগানের সুর মন ছুঁয়েছে। বিশেষ করে বালুতে চিত্রায়িত দৃশ্যের বৈপরীত্যে ‘মিলন হবে কতদিনে’ গানটি পর্দায় ভিন্নরকম দ্যোতনা তৈরি করেছে। অফিসে নারী কর্মীদের সঙ্গে তারিক আনাম খানের দৃশ্য ছিল বেশ মজার। বাথটাবে তারিক আনাম খানের স্ত্রীকে মনে করা কিংবা মায়ের নতুন স্বামীর সঙ্গে স্পর্শিয়ার কথোপকথন ভালো লেগেছে। ভালো লেগেছে প্রধান চরিত্রে তারিক আনাম খানের মতো অভিনেতাকে নির্বাচন করায়। এই বয়সী অভিনেতাদের সারাবিশ্বেই কত বহুরূপী চরিত্রে নির্মাতারা ব্যবহার করেন। অনন্য মামুন এ ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’ গুনগুন করে গাওয়া কিংবা স্পর্শিয়ার পেছনে বাইকে বসার ভঙ্গি, ক্লাবে গিয়ে নাচা- সব মিলিয়ে তারিক আনামকে অন্যরূপে পাওয়া গেছে। তার পোশাক নির্বাচনকেও আলাদা নম্বর দিতে হয়। তবে ‘ক্লিশে’ সংলাপ ও দুর্বল চিত্রনাট্যের কারণে সম্ভাবনাময় চরিত্রটি দিন শেষে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। ডাবিংয়ের কিছু দুর্বলতা বাদ দিয়ে স্পর্শিয়া বেশ সাবলীল ছিলেন তার চরিত্রে। তবে তার চরিত্রের পরিণতি এমন না হলে এবং মন ছুঁয়ে যাওয়া কিছু সংলাপ-দৃশ্য থাকলে এ চলচ্চিত্রটি স্পর্শিয়ার জন্য বিশেষ কিছু হয়ে থাকত। মুকিত জাকারিয়া, আনন্দ খালেদ, ইমতু, করভী মিজান, সায়েম সামাদ চেষ্টা করেছেন। মনিরা মিঠুকে মেয়ে হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি, তার মতো অভিনেত্রী অভিনয় করার সুযোগও পাননি।
সর্বোপরি, বিবর্ণ বসন্ত নিয়ে এসেছে ‘আবার বসন্ত’। অথচ এ ধরনের গল্প নির্বাচনের জন্য পরিচালক যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন, সেই সাহস পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণে ছড়িয়ে দিলে আমরা একটি ভালো চলচ্চিত্র পেতে পারতাম!
ভিন্ন স্বাদের ‘নোলক’
জীবন ও জীবিকা দুটি আলাদা বিষয়। জীবনের প্রয়োজনে যেটা অসম্ভব, জীবিকার প্রয়োজনে সেটিই হয়ে ওঠে নগণ্য / সন্তানের জন্য যদি পরিবারে শত্রুতার জন্ম নেয়, তাহলে সেই সন্তানের জন্মই পাপ/ নোলক শুধু অলঙ্কার না, নোলক একজন নারীর কুমারীত্ব থেকে মাতৃত্বের সেতুবন্ধন / বেলুন যত বড়-ই হোক না কেন, সূক্ষ্ণ সূঁচের খোঁচায় তা নিঃশেষ হয়ে যায়- এরকম অসংখ্য নান্দনিক সংলাপে সমৃদ্ধ ঈদের ছবি ‘নোলক’। ফেরারি ফরহাদের লেখা এই সরল গল্পটি দর্শকের মনে অপার্থিব অনুভূতি সৃষ্টি করে। অবশ্য যুক্তির কাঠগড়ায় এই গল্প অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ! গ্রামের জমিদার পরিবারের দুই ভাইয়ের অঢেল অর্থ শেষ না হতেই পারে, অলস সময়ের চালিকাশক্তি হিসেবে মামলা-মামলা খেলা তাদের জীবনে নতুন রঙ নিয়ে আসতেই পারে- অন্তত বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ফর্মুলার বাইরে গিয়ে যে ভিন্ন স্বাদের একটি গল্প উপস্থাপনের চেষ্টার পাশাপাশি নতুন পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে দুই দেশের তারকাদের নিয়ে বড় আয়োজনে একটি দেশি গল্প বলার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। বিশেষ করে শাকিব খানকে তার চিরচেনা অভিনয়ের বলয় থেকে মুক্ত করে ‘শাওন তালুকদার’ রূপে দর্শকের সামনে হাজির করেছেন পরিচালক। একই কথা প্রযোজ্য নায়িকা ববির ক্ষেত্রেও। তিনি নায়িকা ববিকে দর্শকদের ভুলিয়ে দিয়েছেন। হয়ে উঠেছেন ‘কাজলা’। ক্লাইমেক্স দৃশ্যে শাকিব-ববির অভিব্যক্তি, রসায়ন তাদের নিন্দুকদেরও মন কেড়ে নেবে। শাকিব খান যখনই এ ছবিতে হাজির হয়েছেন, পর্দায় আলো ছড়িয়েছেন। অন্যদিকে ববি যে ‘কাজলা’ চরিত্রে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন, তা স্পষ্ট বোঝা গেছে। কমেডি, রোমান্টিক, স্যাড-প্রতিটি স্তরে ববি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরেছেন। তবে শুধু শাকিব-ববিকে নিয়েই গল্প থেমে থাকেনি। তারিক আনাম খান, নিমা রহমান, শহীদুল আলম সাচ্চু, রেবেকা, রজতাভ দত্ত, সুপ্রিয় দত্তসহ প্রতিটি দীর্ঘ-নাতিদীর্ঘ চরিত্রগুলো অভিনয়ের জায়গা পেয়েছে এবং শক্তিশালী অভিনেতারা তাদের মেধার সদ্ব্যবহার করেছেন এ ছবিতে। বিশেষ করে তারিক আনাম খান [অপ্রতিদ্বন্দ্বী] ও শহীদুল আলম সাচ্চুর [বিস্ময়কর] কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়। রেবেকাও আর দশটি ছবির তুলনায় এ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন।
যদিও নিমা রহমানের চরিত্রটি নিয়ে আরও খেলা যেত। মৌসুমী-ওমর সানীর মতো জনপ্রিয় জুটি এ ছবিতে স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতে মনে দাগ কাটার মতো অভিনয় করেছেন। দেশের বাইরে বড় তারকারা এ ধরনের চরিত্রে কাজ করেন। মৌসুমী-ওমর সানী যতটুকু সময় পর্দায় বিরাজ করেছেন, মুগ্ধ করেছেন। ‘নোলক’-এর প্রাণ গান। ‘শীতল পাটি’, ‘জলে ভাসা ফুল’, ‘কলিকালের রাধা’, ‘চুপিচুপি’ শিরোনামে প্রতিটি গানই গল্পের প্রয়োজনে সঠিক দৃশ্যে যুক্ত হয়েছে। ‘কলিকালের রাধা’ গানে ববির নাচ সাম্প্রতিক সময়ে আইটেম গানের মধ্যে অন্যতম সেরা। ‘শীতল পাটি’ গানে শাকিব খানের নাচ চোখ জুড়িয়েছে, আসিফ আকবরের কণ্ঠ মন ভরিয়েছে। মন ছুঁয়ে যাওয়া এই চলচ্চিত্রের গল্প ও সংলাপ জুৎসই হলেও প্রথমার্ধ্বে দুই ভাইয়ের অঢেল সম্পদের গল্প আর নায়ক-নায়িকার খুনসুটির দৈর্ঘ্য কমিয়ে ‘প্রেম পর্ব’ আরও শক্তিশালী হতে পারত। চিত্রনাট্যে আরও কিছু অধ্যায়/ টুইস্ট যোগ করা যেত। শেষ ক্লাইমেক্স আরেকটু দীর্ঘ হতে পারত। তবে দীর্ঘদিন পর একটি পারিবারিক গল্প দর্শকের সামনে ঈদ উৎসবে নিয়ে আসার জন্য নির্মাতাকে ধন্যবাদ।
পিবিএ/বিএইচ