পিবিএ স্পোর্টস ডেস্ক: চলতি বিশ্বকাপে পয়েন্ট তালিকায় ১০ দলের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান নবম। সেই হিসেবে বলা চলে সেমিফাইনালের দৌঁড়ে তারা অনেক পিছিয়ে। এই যখন অবস্থা তখন পাকিস্তান টিমের বিরুদ্ধে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। পাকিস্তান সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে জানানো হচ্ছে, বর্তমানে পাকিস্তান দলে অস্থিরতা এতটাই বেড়েছে যে, প্রকাশ্যেই দুটি দলে ভাগ হয়ে পড়েছেন ক্রিকেটাররা। ড্রেসিং রুম, হোটেল সব জায়গায় এই দুটি গ্রুপ দেখা যাচ্ছে। গ্রুপের ক্রিকেটাররা একে অপরকে এড়িয়ে চলছেন।
পাকিস্তান সরকার নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল ‘দুনিয়া নিউজ’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে দলে গ্রুপিং দেখা গেছে। তিনি ইমাদ ওয়াসিম, ওয়াহাব রিয়াজ ও ইমাম উল হককে দায়ী করছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভারতের বিপক্ষে মাত্র ১২ রানে আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে কয়েকজন সতীর্থের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন সরফরাজ। অধিনায়কের এমন ক্ষোভের শিকার হন শোয়েব মালিক ও বাবর আজমের মতো তারকা ক্রিকেটাররাও। একপর্যায়ে তিনি ইমাদ ওয়াসিম, ওয়াহাব রিয়াজ ও ইমাম উল হকের বিরুদ্ধে দলাদলি ও তাকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ আনেন।
সূত্র জানায়, সরফরাজ যখন কথা বলছিলেন তখন প্রধান কোচ মিকি আর্থারও নীরব ছিলেন।
এদিকে পাকিস্তানের বেশির ভাগ ক্রিকেটার, সরফরাজ আহমেদকে অধিনায়ক হিসেবে মানতে নারাজ। ফলে লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে সরফরাজ তার টিম মেম্বারদের থেকে তেমন সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এতে করে দলে শৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে না। ক্রিকেটাররা যে যার মত চলাচল করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ম্যানচেস্টারে ভারতের সঙ্গে খেলার আগে হাসান আলী, শাদাব খান, ফখর জামানসহ ৫ পাকিস্তানি ক্রিকেটার শহর ঘুরতে বের হন। তারা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই বের হন।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, বিশ্বকাপে লড়াইয়ের আগে লন্ডনে গিয়ে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা প্রায় রাতে বার ও শিশা ক্যাফেগুলোতে গিয়ে বিনোদনে ব্যস্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক তার স্ত্রী ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জাকে নিয়ে শিশা ক্যাফে গিয়ে বিনোদন করেছেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন ওয়াহাব রিয়াজ ও ইমাম উল হক।
পাকিস্তানের কয়েকজন ভক্ত জানিয়েছেন, তারা শোয়েব মালিক ও সানিয়া মির্জাকে ম্যানচেস্টারের উইনসলো রোডে দেখেছেন। সেখানে তাদের ধূমপান ও শিশা খেতে দেখা গেছে। আর বাকিরা বার্গার এবং পিজ্জা খাচ্ছিলেন।
ভক্তরা বলছেন, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের এসব আচরণই পরাজয়ের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে দলের মধ্যে কোনো ধরনের বোঝাপড়া দেখা যাচ্ছে না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শুধু তাই নয়, আসিফ আলী ও বোলার মোহাম্মদ হাসানকে ম্যাচ খেলাতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট তাতে রাজি হয়নি। তারা ইমাদ ওয়াসিম ও শোয়েব মালিকে দলে অন্তর্ভুক্ত করে।
এদিকে অপর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান দলে একটি গ্রুপকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোহাম্মদ আমির। বাকি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারের পর সরফরাজের ওপর ক্ষুব্ধ হন শোয়েব মালিক, ইমাদ ওয়াসিম, ইমাম উল হক ও বাবর আজমসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।
পিবিএ/বাখ