দুই ছেলে থাকতেও টয়লেটে আশ্রয় শতবছরের বৃদ্ধা এক মায়ের

আল আমীন সুমন, পিবিএ, রংপুর: বৃদ্ধ নছিমন বেওয়া। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন। লাঠিতে ভর দিয়ে কোন রকমে হাটতে পাড়েন। চাতক পাখির মতো একটু খাবারের জন্য তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোন কাজ নেই তার এবং অন্যের সহযোগিতা ছাড়া নিরুপায় এখন চলাফেরা। বয়স তার প্রায় একশ’র কাছাকাছি।

২ ছেলে থাকার পরও স্বামী হারা এই শতবর্ষি বৃদ্ধার মাথা গোঁজাবার জায়গা হয়নি। তাইতো নিদারুণ কষ্ট আর যন্ত্রণায় বছরের পর বছর পরিত্যক্ত টয়লেটেই তাঁর রাত আর দিন কাটছে।

টয়লেটই এখন নছিমন এর ঠিকানা। সেখানে আছে ভাঙা একটি চৌকি কিছু পানির বোতল। টয়লেটের দুর্গন্ধের সাথে রাতে অসহ্য গরম আর মশার কামড় এই বৃদ্ধার নিত্যসঙ্গী।

রাহেলা বেগম, বড় ছেলের স্ত্রী জানান আমরা অনেক কিছু করি কিন্তু কি করবো নিজের সংসার বাদদিয়ে তো আর বেশি কিছু করতে পারবো না।

নছিমন কোন রকমে রাত পার হলেই লাঠিতে ভর করে টয়লেট থেকে বেরিয়ে পড়েন। কখনো রাস্তার উপর নতুবা ড্রেনের স্ল্যাপের উপর বসে শুয়ে থাকেন। এমন কষ্টের দৃশ্য সন্তানদের চোখে না পড়লেও গ্রামের মানুষ ঠিকই উপলদ্ধি করতে পারেন। তাই স্থানীয়দের সাহায্য সহযোগিতায় খাবার জুটে তার মুখে।

এবিষয়ে একি এলাকার সালমা বেগম, জানান উপযুক্ত দুই ছেলে থাকার পরেও তার এমন মানবিক জীবন যাপন সত্যি খুবই কষ্ট লাগে

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নছিমন বেওয়া আজ বাকরুদ্ধ। বুকভরা কষ্টগুলো চিৎকার করে বলতে চাইলেও বয়সের ভারে বন্ধ হয়ে গেছে তার আওয়াজ। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কেন কাজ নেই তার। চোখের সামনে সন্তানদের অবহেলা দেখে কিছু করার নেই নিরুপায় এই বৃদ্ধা মায়ের। বলে জানান এই এলাকার রিনা বেগম ও সিরাজুল ইসলাম,

স্বামী মারা যাবার পর থেকে সন্তানদের অনাদরে অন্যের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ভিক্ষা করতেন। অবশেষে বড় ছেলে জয়নাল মিয়া রংপুর মহানগরীর নিউ জুম্মাপাড়া কলোনীর ভিতরে সিটি করপোরেশনেরপাবলিক টয়লেটের এক কোণায় থাকার ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে ওই টয়লেটেই বৃদ্ধা নছিমনের ঠিকানা। মমেনা বেগম, ছোট ছেলের স্ত্রী পিবিএ কে জানান আমরা তার খোঁজ খবর নিতে পারবো না, তার বৃদ্ধা অবস্থার প্রসাব ও উচ্ছিষ্ট পরিস্কার করতে ভালো লাগে না আপনারা সাংবাদিক আপনাদের যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন

সরকারি সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত শতবর্ষি এ বৃদ্ধাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন এই ওযার্ডের কাউন্সিলর।মোছা. হাসনা বানু,

এলাকাবাসীর দাবী দ্রুত তাকে বৃদ্ধশ্রমে প্রেরণ করে ছেলেদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে মায়ের অধিকার প্রতিষ্টা করতে হবে।

পিবিএ/এএএস/জেডআই

আরও পড়ুন...