বিশ্ব শরনার্থী দিবসে নিরাপদ প্রত্যাবাসন চায় রোহিঙ্গারা

পিবিএ, কক্সবাজার: আজ ২০ জুন বিশ্ব শরনার্থী দিবস। বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশে ও দিবস টি পালিত হচ্ছে। তবে এবারের তাৎপর্যটা ভিন্ন। কারণ বিশ্বের সব চেয়ে বড় শরনার্থী আশ্রয় কেন্দ্রে বাংলাদেশে। কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া নির্যাতন-নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জাতিগত স্বীকৃতি আর নাগরিক অধিকার নিয়ে স্বদেশে ফিরতে চান। বিশ্ব শরণার্থী দিবসে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিকট এসব রোহিঙ্গাদের আবেদন তাদের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার।কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মিয়ানমারের আন্তরিকতার ঘটতি দেখছেন। ফলে এ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান নিয়ে আশাহত তারা। তারাও এর জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের জোর প্রচেষ্টার কথা বলছেন।

শরনার্থী দিবস উপলক্ষে উখিয়ার কুতুপালং ২ নাম্বার ক্যাম্প থেকে দুপুরে বের হবে একটি বড় র‌্যালী হবে তাতে অংশ নেবেন বাংলাদেশস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। এ ছাড়া আরো কয়েকটি ক্যাম্পে ও নানা আয়োজন থাকছে। কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফ এখন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার ৩২ টি ক্যাম্পে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বসবাস। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা এ রোহিঙ্গা সমস্যা। যদিও এসব রোহিঙ্গাদের এখনো শরাণার্থীর মর্যাদা দেয়া হয়নি। বিশ্ব শরণার্থী দিবসে এসব রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। মিয়ানমারে তাদের উপর চলা নির্যাতনের বর্ননা দেয়ার পাশপাশি তাদের দাবি মর্যদার সাথে যেনো তাদের কে মিয়ানমার ফেরত পাঠানো হয়। এর জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ককে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান ও তাদের।

মিয়ানমারে সম্মানের সাথে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নুরুল আলম,জসিম উদ্দিন,আবুল হোসেন আর মামুনুর রশিদ বলেন.আমরা এ দেশে থাকার জন্য আসিনি। প্রাণ বাচাঁতে এসেছিলাম। নিরাপদে আমাদের নিয়ে গিয়ে আমাদের জমি জমা সহ সব কিছু ফেরত দিলে আমরা চলে যাবো। নিজের দেশ ফেলে কেউ বাইরে থাকতে চায় না। আমরা ও চায় না এ দেশে থাকতে। তবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যেনে মিয়ানমারে পাঠানো হয়। মিয়ানমারের ইচ্ছার অভাবের কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দেরী হচ্ছে বলে মনে করেন শরণার্থী বিশেষজ্ঞরা। ইন্টার সেক্টর কো-অডিনেশন গ্রুপের মুখপাত্র সৈকত বিশ্বাস বলেন. আর্ন্তজাতিক মানবিক সংস্থা গুলো মনে করছে প্রত্যাবাসন হতে হবে সেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের নিজস্ব তাগিত থেকে। যেনো তাদের আবার ফিরে আসতে না হয়। মিয়ানমারের কথা বিশ্বাস করতে রাজী নন রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় স্বদেশে ফেরত যেতে এখনো রাজী নন বলে মনে করেন শরণার্থী বিশেষজ্ঞরা। শরণার্থী বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা র্দীঘ মেয়াদী। এটা আন্তর্জাতিক সমস্যাও।

বিশ্বকে এটা প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে তারা রোহিঙ্গার পক্ষে আন্তরিক। শরাণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন. প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। তবে মিয়ানমারের প্রক্রিয়ার কারণে এটা দেরী হচ্ছে। বিশ্বে ৭ কোটি লোক প্রতি বছর আশ্রয়হীন হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় গ্রহন করছে। আজকের এ দিনে তা স্বরন করিয়ে দেয়া আর এ সমস্যা সমধানে বিশ্ব কে সামিল করার তাগিত দেয়া আমাদের লক্ষ্য । ১৯৯১ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা আসা শুরু হয়। যার মধ্যে ২০০৫ সালে সর্বশেষ প্রত্যাবাসন হলেও তা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে দফায় দফায় নতুন রোহিঙ্গা আসা অব্যাহত রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট সমধানে বিশ্ব সম্প্রদায় মানবিকতার জায়গা থেকে এগিয়ে আসবে এমনই প্রত্যাশা সকলের।

পিবিএ/টিএ/হক

আরও পড়ুন...