🔸 মদীনার আজওয়া খেজুরের ব্যাপারে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:
عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ تَصَبَّحَ سَبْعَ تَمَرَاتِ عَجْوَةٍ لَمْ يَضُرُّهُ ذَلِكَ الْيَوْمَ سَمٌّ وَلاَ سِحْرٌ ‏”
সাআদ ইবন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সা.) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন বিষ এবং যাদু তার কোন ক্ষতি করবে না।” (বুখারী ও মুসলিম)
🔸 আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীছে মহানবী (সা.) আরো পরিষ্কারভাবে বলেছেন,
إن في عجوة العالية شفاء وإنها ترياق أول البكرة
“(মদীনার) উচ্চভূমির আজওয়া’ খেজুরের মধ্যে রোগের নিরাময় রয়েছে । আর উহা ভোরে খাওয়া বিষের প্রতিষেধক’।” (মুসলিম, মিশকাত হা/৪১৯১)

🔸 অন্য একটি হাদীসে মদীনার যে কোন খেজুরের ব্যাপারে এই বৈশিষ্টের কথা বর্ণিত হয়েছে। রাসুল সা. বলেন:
مَنْ أَكَلَ سَبْعَ تَمَرَاتٍ مِمَّا بَيْنَ لَابَتَيْهَا حِينَ يُصْبِحُ ، لَمْ يَضُرَّهُ سُمٌّ حَتَّى يُمْسِيَ

“যে ব্যক্তি সকালে মদীনার সাতটি খেজুর খাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন বিষ তার ক্ষতি করবে না।” (সহীহ মুসলিম, হা/২০৪৭)
সাধারণভাবে খেজুর অত্যন্তু ওষধী ও পুস্তিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। কিন্তু হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী, মদীনা মুনাওয়ারার আজওয়া অথবা অন্য কোন খেজুরের রোগ-ব্যাধি উপশম বিশেষ করে যাদু ও বিষক্রিয়া প্রতিরোধে বিশেষ বৈশিষ্ট প্রমাণিত হয়।

সাতটি খাওয়া কি জরুরি?

ইমাম নওবী রহ. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু সাত সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সেহেতু নিশ্চয় তাতে বিশেষ কোন রহস্য ও মর্যাদা আছে যা আমরা না জানলেও আমাদের বিশ্বাস করা জরুরি। এই সংখ্যাটি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এবং যাকাতের মতই নির্দিষ্ট সংখ্যা ও পরিমান নির্ভর। এ ব্যাপারে এটাই সঠিক কথা।” (সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ)
সুতরাং সাতটি খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে উপরোক্ত উপকারিতা লাভের ক্ষত্রে আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ। কিন্তু কেউ যদি শারীরিক বা রুচিগত সমস্যার কারণে সাতটি খেতে না পারে তাহলে তাহলে যতটি সম্ভবত ততটি খাবে। তাহলেও আল্লাহ চাইলে উক্ত উপকারিতা লাভ করবে। কারণ, সাধ্যাতিরিক্ত বা অরুচি সত্বেও খেলে শরীরে অন্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আপনি জানেন কি খেজুরে লুকিয়ে আছে ক্যান্সার সহ ৭টি রোগের মহৌষধঃ

আমাদের দেশে সৌদি আরবের খেজুর সারা বছর পাওয়া গেলেও মূলত রমজান মাস ছাড়া ফলটি খুব একটা কেউই খায় না। কিন্তু আপনি কি জানেন আরবের এই ফলটির মধ্যে লুকিয়ে আছে সাতটি রোগের মহাওষুধ।
আসুন জেনে নিই খেজুরের সেই সাতটি রোগের বিরুদ্ধে কিছু স্বাস্থ্যগত গুণের কথা।
১। দ্রুত শক্তি প্রদানকারী খেজুরে আছে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ যা আপনাকে শক্তি দিয়ে থাকে। এটি খুব দ্রুত কাজের শক্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসে শরীরে। আপনি যদি খুব ক্লান্ত থাকেন তখন কিছু খেজুর খাবেন, দেখবেন শরীরের ক্লান্তি এক নিমিষে দূর হয়ে গেছে।
২। রক্ত স্বল্পতা দূর করে যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। খেজুর রক্ত উৎপাদন করে দেহের রক্তের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
৩। কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে খেজুরে কোনো কোলেস্টেরল এবং বাড়তি পরিমাণে চর্বি থাকে না। ফলে আপনি সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করে অন্যান্য ক্ষতিকর ও চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
৪। ওজন কমিয়ে থাকে মাত্র কয়েকটা খেজুর কমিয়ে দেয় ক্ষুধার জ্বালা। এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আর এই কয়েকটি খেজুর শরীরের শর্করার চাহিদাও পূরণ করে থাকে। ফলে আপনি শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ না করলেও শরীরে শর্করার অভাব হয় না।
৫। হজমে সাহায্য করে কখনো বেহিসেবি খাওয়াদাওয়া করে ফেললে, অনেক সময় বদহজম হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি দেবে কয়েকটি খেজুর।
৬। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ যা খাদ্য পরিপাক হতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। ডায়রিয়া হলে কয়েকটি খেজুর খান। এটি ডায়রিয়া রোধ করতে সাহায্য করবে।
৭। ক্যান্সার প্রতিরোধ অবাক হলেও সত্য খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এক গবেষনায় দেখা যায় খেজুর পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। আর যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের বেলায় ক্যান্সারের ঝুঁকিটা কমে যায় অনেকখানি।

পিবিএ/এমএস