পিবিএ, ঢামেক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ট্রলি বাণিজ্যের পাশাপাশি চলছে হুইলচেয়ার রমরমা বাণিজ্য। একশ্রেণীর নারী দালাল বাইরে থেকে হুইলচেয়ার কিনে এনে রোগী বহনের নামে স্বজনদের পকেট কাটছে। এরা হাসপাতাল জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হুইলচেয়ার নিয়ে। রোগীদের জিম্মি করে বাড়তি টাকা নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী ভাগানোর কাজেও এদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
এই নারীদের অনেকেই এ হাসপাতালের কোনো না কোনো কর্মচারী, নেতার আত্মীয়-স্বজন। এজন্য কারো হুমকিতে ভয় পায়না এরা। এদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে রোগী বহনের অনুমতি দেয় হাসপাতালের সর্দার, প্রভাবশালী কর্মচারী, ওয়ার্ড মাস্টার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, নতুন ভবন, সিটিস্ক্যান, আল্ট্রাসাউন্ড রুম এবং এক্সরে রুমের আশপাশ সহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০/৬০ জন নারী দালাল ওতপেতে থাকে রোগী ধরার জন্য। দরকষাকষি করে তারপরই রোগী বহন করে তারা।
জরুরী বিভাগের আল্ট্রাসাউন্ড রুমের পাশে দেখা যায় হুইলচেয়ার নিয়ে বসে আছে চল্লিশর্ধো এক নারী দালার। তার সাথে কথা বলে জানান, তার নাম নুরজাহান বেগম। কাজ করে হাসপাতালের ২১৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্পেশাল আয়া হিসেবে। তবে রোগী ধরার জন্য তিনি হুইল চেয়ার নিয়ে হাসপাতালের দুই তলা দিয়ে ঘুরে ২১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এক গাইনী রোগীকে হুইল চেয়াওে তোলে নিয়ে আসে আল্ট্রাসাউন্ড রুমে। পরিক্ষা শেষে আবার গাইনী ওয়ার্ডে দিয়ে আসবে তাকে, এজন্য ২শ টাকা চুক্তি করে ওই রোগীর সাথে।
এ ব্যাপারে রোগীর স্বামী মামুনুর রশিদ বলেন, আমার স্ত্রী অন্তসঃত্ত্বা। তার পরিক্ষা করানোর জন্য নিয়ে আসার জন্য কিছুই পাচ্ছিলাম না। পরে ২শ টাকা ভাড়ায় খালার হুইল চেয়ারে করে নিয়ে এসেছি।
ওই নারী দালাল বলেন, ৮৮ সন থেকে তিনি এই হাসপাতালে কাজ করে। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা ইনকাম করেন তিনি। কোনো কোনো দিন কম বেশীও হয়। তবে দিন শেষে সরদারকে ২-৩ শ টাকা চাঁদা দিতে হয়। না হলে হুইল চেয়ার নিয়ে রোগী বহন করতে দেয়না। অনেক সময় চাঁদার জন্য ওয়ার্ড বয় হুইর চেয়ার আটকেও রাখে।
অনেক রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, হুইল চেয়ারে করে রোগী নিতে হলে তারা একেক সময় ৫-৬ শ টাকাও দাবি করে। আবার একটু দূরে যেতে চাইলে তাদের টাকার দাবিটাও বেড়ে যায়।
এবিষয়ে কথা হলে জরুরী বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, এরা রোগী ধরার জন্য জরুরী বিভাগ সব সবখানে ঘুরাফেরা করে। আমি যখনই এদের দেখি তখনই তাড়িয়ে দেই। অনেকবার ধরে পুলিশ ক্যাম্পের দিয়ে দিয়েছি। আনসারাই এদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে ছেড়ে দেয়।
পিবিএ/এইচএ/জেডআই